কিভাবে পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন

আমরা সকলেই জানি যে, আমাদের বাংলাদেশ যে কোনো অপারেটরের সিম রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড এর দরকার হয়।

কিভাবে পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন
পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন

কিন্তু আপনি কি জানেন, এই ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াও অন্যান্য ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব? হয়তোবা আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা এই বিষয় টি সম্পর্কে জানেন না। 

আর সে কারণে মূলত আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। কেননা আজকে আমি আপনাদের কে দেখিয়ে দিব যে, জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়াও আপনি কোন কোন ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

এবং এই ডকুমেন্ট গুলো দিয়ে আপনি সর্বোচ্চ কত গুলো সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

মূলত আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন, পাসপোর্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রশন এবং জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা নিয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য।

কেন অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিষ্ট্রেশন করবেন?

যদিওবা প্রথম দিকে বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছিল।

যে কোন ব্যক্তি যদি সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চায়, তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তির রেজিস্ট্রেশন করার সময় জাতীয় পরিচয় পত্রের দরকার হবে। 

কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই সিদ্ধান্তের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। কেননা বর্তমান সময়ে যদি কোন একজন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে।

তাহলে সেই ব্যক্তি তার পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। তবে আপনি যদি এই ডকুমেন্টস গুলো দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চান।

তাহলে আপনি সর্বোচ্চ দুই (০২) টি পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

এর মূল কারণ হলো, আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন। যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয়পত্র হাতে পাননি।

আর এই জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে না পাওয়ার কারণে সেই ব্যক্তিরা নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারে না।

মূলত এই সমস্যার সমাধান করার জন্যই বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে অন্যান্য ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করার সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিষ্ট্রেশন করা যায়?

আপনি যদি সিম রেজিস্ট্রেশনের প্রথম ধাপের কথা চিন্তা করে দেখেন। তাহলে লক্ষ্য করতে পারবেন যে, সেই সময় যারা সিম রেজিষ্ট্রেশন করতে চাইতো।

তাদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হতো। কিন্তু এই জাতীয় পরিচয় পত্রের নানা বিধ সমস্যার কারণে সেই নিয়মের মধ্যে অনেকটা পরিবর্তন করা হয়েছে।

কেননা আপনি বর্তমান সময়ে আপনার নিকট থাকা পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমেও সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। 

কিন্তু সমস্যা হল, আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন। তাহলে আপনি সর্বোচ্চ ১৫ টি পর্যন্ত সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

কিন্তু আপনি যদি অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন। যেমন, পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে। তাহলে আপনি এই ধরনের ডকুমেন্ট গুলো দিয়ে সর্বোচ্চ দুইটি সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করার শর্তাবলী 

আপনি যেহেতু জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়াই অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন। সেহেতু অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে।

আর অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে একজন ব্যক্তি কে আসলে কি কি শর্ত মানতে হবে। সেই শর্ত গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন, 

  1. আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া অন্যান্য কোন ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে আপনি সর্বোচ্চ দুইটি সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন। 
  2. তবে আপনি যদি অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে প্রি রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।
  3. কিন্তু আপনি যদি পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন না করেন। তাহলে আপনার সেই সিমটি পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হবে।
  4. এছাড়াও আপনি যদি অন্যান্য ডকুমেন্টস এর সাহায্যে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে আপনি কোন খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে সিম নিতে পারবেন না। বরং আপনাকে সরাসরি যে সিম কিনতে চান, সেই সিমের অপারেটরের কেন্দ্রে যেতে হবে।
  5. যখন আপনি অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন। তখন ছয় মাস অতিক্রম হওয়ার আগেই আপনার মোবাইলের মধ্যে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য জানিয়ে দেওয়া হবে। 

তো আমাদের মধ্যে যে সকল মানুষ জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়াই সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাদের জন্য আসলে কি কি শর্ত রয়েছে। সেই শর্ত গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হলে আপনাকেও এই শর্ত গুলো মেনে চলতে হবে।

পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

আমরা এতক্ষণের আলোচনা থেকে জানতে পারলাম যে, বর্তমান সময়ে জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়াও অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা যায়।

এবং সেই আলোচনা তে আমি আপনাদের স্পষ্ট করে বলেছি। এখন আপনি আপনার নিকট থাকা পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। 

এখন অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে। সেটি হল, কিভাবে পাসপোর্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন অথবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা যায়।

আর আপনার মনেও যদি এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে জেনে নিন… 

যেহেতু আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়াই সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন। সেহেতু আপনি আপনার এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া কোন লোকাল বা খুচরা বিক্রেতার থেকে সিম নিতে পারবেন না।

বরং আপনি যে অপারেটরের সিম জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই কিনতে চাচ্ছেন বা রেজিস্ট্রেশন করতে চাচ্ছেন। আপনাকে সেই অপারেটরের কেন্দ্রে যেতে হবে। 

যেমন ধরুন, আপনি বাংলালিংক এর সিম রেজিস্ট্রেশন করতে চাচ্ছেন। এখন আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াই খুচরা দোকানে যান।

তাহলে কিন্তু তারা আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিতে পারবে না। বরং আপনাকে নিকটস্থ বাংলালিংক এর কেন্দ্রে যেতে হবে।

এবং সেখানে গিয়ে তাদের কে জানিয়ে দিতে হবে যে, আপনি আপনার পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে চাচ্ছেন।

আর যখন আপনি তাদের কে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়ে দিবেন। তখন আপনাকে আসলে কি কি কাজ করতে হবে। সেই কাজ গুলো সম্পর্কে তারা জানিয়ে দিবে।

এবং সেখান থেকে আপনি আপনার পাসপোর্ট অথবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করার সমস্যা কি? 

যেহেতু অন্যান্য ডকুমেন্টস দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা যায়। সেহেতু আমরা কেন জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করব?

আর আপনার মনেও যদি এই ধরনের চিন্তা ভাবনা আসে। তাহলে আপনার কিছু কথা জেনে রাখা উচিত। যেমন, 

আপনি পাসপোর্ট অথবা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করলেও। পরবর্তী সময়ে আপনাকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে সিম প্রি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

কেননা আপনি যদি অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন। তার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে যদি আপনি জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সিম প্রি রেজিস্ট্রেশন না করেন।

তাহলে কিন্তু আপনার সেই সিমের সংযোগ বন্ধ করে দিতে পারে।

মূলত অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করার মূল সমস্যা হল এটাই। তাই অবশ্যই আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সাহায্য সিম রেজিষ্ট্রেশন করার চেষ্টা করবেন।

কিন্তু আপনি যদি অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন। তাহলে আপনাকে বাধ্যতামূলক পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সিম প্রি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

FAQ’s

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে কি সিম রেজিষ্ট্রেশন করা যায়?

হ্যাঁ, জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিষ্ট্রেশন করা যায়। তবে, আপনার জন্ম নিবন্ধনপত্রটি অবশ্যই সঠিকভাবে পূরণ করা এবং আপ-টু-ডেট থাকতে হবে। আপনার জন্ম নিবন্ধনপত্রের সাথে আপনার একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবিও থাকতে হবে।

ফোন নাম্বার কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা কিভাবে জানবো?

আপনি আপনার মোবাইল ফোন থেকে *১৬০০১# ডায়াল করে আপনার সিমের তথ্য জানতে পারবেন।

কিভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা যায়?

আপনি আপনার মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারবেন। আপনার সাথে আপনারপরিচয়পত্রের একটি কপি থাকতে হবে।

সিম তুলতে কত বছর বয়স লাগে?

বাংলাদেশে সিম তুলতে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য তাদের অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে সিম তুলতে হবে।

সিম রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমাদের শেষকথা

আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, কিভাবে পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।

এর পাশাপাশি অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হলে কি কি শর্ত মানতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছি।

আশা করি, আজকের এই আলোচিত আলোচনা গুলো সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণা নিতে পেরেছেন। আর আপনি যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো বিনামূল্য পেতে চান।

তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।  

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top