ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায় : ই পাসপোর্ট কি এবং ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে আমি আমার গত আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।
এবং সেই আর্টিকেল গুলো তে আমি আপনাদের দেখিয়ে দিয়েছি । যে, কিভাবে আপনি আপনার নিজস্ব রেজিস্ট্রেশন আইডি এবং জন্ম তারিখ দিয়ে আপনার ই পাসপোর্ট চেক করবেন।
আর সেই আর্টিকেল গুলো তে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। যে, এই ধরনের ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়। ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট হক বা ৫ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট হোক।
আর আজকের আর্টিকেলে আমি এইবিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।
মূলত এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল থেকে আপনি স্পষ্ট ভাবে জেনে নিতে পারবেন। যে, একজন ব্যক্তি যখন ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবে। তখন সেই ব্যক্তি কত দিনে ই পাসপোর্ট পাবে।
আপনার জন্য আরোও লেখা আছে…
- পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
- ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
- 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
যারা মূলত নিয়মিত এক দেশ থেকে অন্য আরেক টি দেশে ভ্রমণ করেন। তারা এই পাসপোর্ট এর গুরুত্ব সম্পর্কে বেশ ভালো করে জানবেন।
তবে বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশের ই পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে। যার মাধ্যমে আপনি এখন অনলাইনের মাধ্যমে এই ধরনের এই ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এবং নিজের ঘরে বসেই অনলাইনে মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। তবে আমরা যারা নতুন ব্যক্তি হিসেবে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করি।
তাদের মনে বারবার একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। আর সেই প্রশ্নটি হল যে, ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়। তো চলুন এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক যে, ই-পাসপোর্ট পাবেন কত দিনে।
পাসপোর্ট হয়েছে কিনা কিভাবে জানবো ?
ই-পাসপোর্ট পাবেন কত দিনে সে বিষয় টি নিয়ে আজকে অবশ্যই বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। তবে তার আগে আপনাকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। যে, আপনার ই পাসপোর্ট হয়েছে কি না সেটা আপনি আসলে কিভাবে জানবেন।
অর্থাৎ আপনি যদি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন। এবং আপনার আবেদন করার পর সেই ই পাসপোর্ট এর কাজ কতটুকু অগ্রসর হয়েছে।
আপনার সেই ই পাসপোর্ট এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে কি না। সে সম্পর্কে আপনি যাবতীয় তথ্য গুলো ঘরে বসে থেকে জেনে নিতে পারবেন।
তবে এই কাজ টি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে ই পাসপোর্ট অনলাইন চেক করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন এবার সেই নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত আপনাকে ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তো আপনি চাইলে google থেকে ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন।
অথবা এখানে ক্লিক করেও সরাসরি সেই সাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। যখন আপনি উক্ত ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করবেন। তখন আপনাকে পুনরায় লগইন করতে হবে।
আর লগইন করার পরে আপনি Check Status নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে সেই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
আর যখন আপনি এখানে ক্লিক করবেন তখন আপনি দুটো ফাঁকা বক্স দেখতে পারবেন। প্রথম বক্সে আপনি আপনার রেজিস্ট্রেশন আইডি এবং দ্বিতীয় বক্সে আপনার জন্ম তারিখ বসিয়ে দেয়ার পরে।
সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনি আপনার ই পাসপোর্ট এর যাবতীয় তথ্য গুলো জেনে নিতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায় ?
যদি আপনি একান্ত ভাবে জানতে চান যে, ই পাসপোর্ট কতদিনে পাওয়া যায়। তাহলে আমি কোন ভাবে আপনাকে এক কথায় উত্তর দিতে পারব না।
কারণ যখন আপনি ই পাসপোর্ট করতে যাবেন। তখন আপনি বিভিন্ন বছর মেয়াদী এবং বিভিন্ন পৃষ্ঠার পাসপোর্ট দেখতে পারবেন। তো এই ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদ এবং বিভিন্ন পৃষ্ঠার পাসপোর্ট গুলো মূলত ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়।
আর সেজন্য এই বিষয়টি কে একটু বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে হবে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক যে, বিভিন্ন ধরনের ই পাসপোর্ট কতদিনে পাওয়া যায়।
এবং আপনি আসলে আপনার এই পাসপোর্ট কতদিনে পাবেন। সেটা মূলত নির্ভর করবে আপনি কত বছর মেয়াদী এবং কত পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট করতে চান তার উপর।
আপনি আরোও জানতে পারেন…
- সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা ও আবেদনের নিয়ম
- পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ওমানের ভিসা চেক করার নিয়ম
- ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম
৪৮ এবং ৬৪ পাতার ই পাসপোর্ট
যখন আপনি ৪৮ এবং ৬৪ পাতার ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি বিভিন্ন মেয়াদের ই পাসপোর্ট দেখতে পারবেন। যেমন, আপনি চাইলে পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে পারবেন। অথবা আপনি চাইলে দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে পারবেন।
কিন্তু আপনার এই মেয়াদ অনুযায়ী এবং ই পাসপোর্ট এর ধরন অনুযায়ী নির্ভর করবে। আপনি আসলে ই পাসপোর্ট কত দিনে পাবেন। যেমন:
৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার ই পাসপোর্ট
- যখন আপনি ৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ২০ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন।
- এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৪০২৫ টাকা (রেগুলার পাসপোর্ট)।
- আপনি যদি ৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে পেতে চান। তাহলে আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৬৩২৫ টাকা। মূলত এই ধরনের পাসপোর্ট গুলো কে জরুরি পাসপোর্ট বলা হয়ে থাকে।
- আপনি যদি ৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ৩ দিনের মধ্যে পেতে চান। তাহলে আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৮৬২৫ টাকা। মূলত এই ধরনের পাসপোর্ট গুলো কে অতি জরুরি পাসপোর্ট বলা হয়ে থাকে।
১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার ই পাসপোর্ট
- যখন আপনি ৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ২০ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৫৭৫০ টাকা।
- যখন আপনি ৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ৭ দিনে পেতে চান। তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৮০৫০ টাকা।
- যখন আপনি ৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ৩ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ১০৩৫০ টাকা।
৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার ই পাসপোর্ট
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ২০ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৬৩২৫ টাকা।
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ৭ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৮৬২৫ টাকা।
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ৩ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ১২০৭৫ টাকা।
১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার ই পাসপোর্ট
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ২০ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৮০৫০ টাকা।
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ৭ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ১০৩৫০ টাকা।
- যখন আপনি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করবেন। তখন আপনি ৩ দিনে সেই ই পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং তার জন্য আপনাকে ব্যয় করতে হবে ১৩৮০০ টাকা।
তো আপনি আসলে ই পাসপোর্ট কতদিনে পাবেন। সেই বিষয় নিয়ে উপরে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এবং আপনি এই আলোচিত আলোচনা থেকে খুব সহজ ভাবে বুঝতে পারবেন।
যে, আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং ধরন অনুযায়ী আপনি সেই ই পাসপোর্ট কতদিন পরে আপনার হাতে পাবেন।
যেসব ভুলে ই পাসপোর্ট পেতে দেরি হয়
অনেক সময় দেখা যায় যে, আমাদের ই পাসপোর্ট আসতে অনেক বেশি দেরি হয়ে যায়। মূলত তখন আমরা বুঝতে পারি না যে, অন্যান্য মানুষ এর তুলনায় আমাদের এই পাসপোর্ট গুলো এত দেরিতে আসার কারণ কি।
তো কখনো যদি আপনার এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাহলে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে হয়তো আপনার কোন প্রকার ভুল রয়েছে।
যার কারণে আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত ই পাসপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে। তবে জানার বিষয় হলো যে, এমন কোন ভুল গুলো রয়েছে। যে গুলোর কারনে ই পাসপোর্ট আসতে অনেক দেরি হয়।
চলুন এবার তাহলে সেই ভুল গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এবং পরবর্তী সময়ে আপনি যখন অন্য কারো ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। তখন এই ভুল গুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।
- যখন আমরা ভুলবশত আমাদের নামের ক্ষেত্রে ভুল তথ্য প্রদান করি।
- যদি জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে ঠিকানা অথবা নামের অমিল থাকে।
- যখন ভুল করে নামের পদবী যুক্ত করি কিংবা নামের পদবী থাকার পরেও আমরা সেটি উল্লেখ করিনা।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন করার সময় ভুল তথ্য প্রদান করা।
মূলত এই ভুল গুলোর কারণে আমাদের ই পাসপোর্ট আসতে দেরি হয়। তাই যখন আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন।
তখন এই ভুল গুলোর প্রতি যথেষ্ট পরিমাণে সতর্ক থাকার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনি খুব দ্রুততার সাথে ই পাসপোর্ট আপনার হাতে পাবেন। নতুবা আপনারও ই পাসপোর্ট আসতে অনেক দেরি হবে।
আপনি দেখতে পারেন…
- আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
- কিভাবে পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করবেন
- পাসপোর্ট রিনিউ করার পর পুরাতন পাসপোর্ট কি করবেন?
আমাদের শেষকথা
ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায় তা নিয়ে আজকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এবং এই আলোচিত আলোচনা থেকে আপনি স্পষ্ট ভাবে ধারণা নিতে পেরেছেন। যে, ই পাসপোর্ট কতদিনে পাওয়া যায়।
এর পাশাপাশি কোন ভুল গুলোর কারণে আপনার ই পাসপোর্ট আসতে দেরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সে সম্পর্কেও আমি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।