ইউটিউব এসইও কি ? এ সম্পর্কে যদি আপনার পূর্নাঙ্গ ধারনা না থাকে। তাহলে ইউটিউব সেক্টরে আপনার মূল্য ঠিক লবনবিহীন তরকারির মতো।
ইউটিউব এসইও এমন একটি বিষয়, যার মাধ্যমে কোনো Youtube channel বা ভিডিওতে প্রচুর ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার আনা সম্ভব। আর যখন আপনার ভিডিওতে প্রচুর ভিউ আসবে, তখন আপনার চ্যানেলে অনেক সাবস্ক্রাইবারও যোগ হবে।
ঠিক তখনই আপনি পৌঁছে যাবেন ইউটিউব সেক্টরের সফলতার দ্বারপ্রান্তে।
যদি আপনিও ইউটিউব সেক্টরে সফল হতে চান এবং নিজেকে একজন সফল ইউটিউবার হিসেবে গড়ে তুলতে চান, তাহলে অবশ্যই ইউটিউব এসইও সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি ইউটিউব এসইও সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো, যাতে আজকের পর থেকে আপনি নিজেকে একজন YouTube SEO Expert হিসেবে দাবি করতে পারেন।
ইউটিউব নিয়ে আরোও দেখুন…
- ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর উপায়
- ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম করার নতুন উপায়
- ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়
SEO (এসইও) কি ?
ইউটিউব এসইও সম্পর্কে জানার আগে আমাদের আগে বুঝতে হবে SEO আসলে কী।
SEO এর পূর্ণরূপ হলো Search Engine Optimization। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে (যেমন Google, Yahoo, Bing, DuckDuckGo ইত্যাদি) আপনার কন্টেন্টকে অপটিমাইজ করা হয়, যাতে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায় এবং সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে।
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হলো Google। এই সার্চ ইঞ্জিনে বা অন্য যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে আপনার কন্টেন্টকে সার্চ র্যাংকে নিয়ে আসার জন্য যে কাজগুলো করা হয়, সেগুলোই এসইওর অন্তর্ভুক্ত এবং এসিও বলা হয়ে থাকে।
ইউটিউব এসইও কি ?
ইউটিউব, যদিও গুগলের নিজস্ব প্রোডাক্ট, তবুও এর একটি স্বতন্ত্র সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, গুগলের পরেই সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয় ইউটিউবে।
যখন আপনি আপনার কনটেন্ট বা ভিডিওকে ইউটিউবের সার্চ ইঞ্জিনে সঠিকভাবে অপটিমাইজ করতে যা যা কাজ করেন, সেই কার্যক্রমগুলোই ইউটিউব এসইও নামে পরিচিত।
ইউটিউব এসইও কেন করবেন ?
সহজভাবে বলতে গেলে, ইউটিউব ভিডিওতে আশানুরূপ ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার জন্য এসইও করা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে (YT Channel) একটি ভিডিও আপলোড করেন এবং তা কেউ না দেখে, তাহলে আপনার সেই ভিডিও তৈরির পরিশ্রম পুরোপুরি বৃথা হয়ে যাবে।
কিন্তু, সঠিকভাবে ইউটিউব এসইও ব্যবহার করে ভিডিও আপলোড করলে আপনার ভিডিও প্রচুর ভিউ পাবে। এর মাধ্যমে আপনি ইউটিউব সেক্টরে একটি বড় এবং সক্রিয় কমিউনিটি তৈরি করতে পারবেন।
তবে এই কমিউনিটি গড়তে এবং ইউটিউবে সফল হতে হলে, ইউটিউব এসইও সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকা আবশ্যক।
কিভাবে ইউটিউব এসইও করবেন ?
এবার আমরা মূল বিষয়ে আসি। ইউটিউব এসইও করার আগে আপনাকে দুটি বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে:
- ইউটিউব সার্চ ইঞ্জিন কী?
- ইউটিউব সার্চ কীভাবে কাজ করে?
ইউটিউব সার্চ ইঞ্জিন কী?
যখন আপনি ইউটিউবে প্রবেশ করেন, তখন সবার উপরে একটি Search box দেখতে পান। এটিই হলো ইউটিউবের সার্চ ইঞ্জিন। এটি দেখতে সাধারণ একটি সার্চ বক্স মনে হতে পারে, কিন্তু এসইওর পুরো কার্যপ্রণালীর মূল কাজ এখান থেকেই শুরু হয়।
ইউটিউব সার্চ কীভাবে কাজ করে?
একটু চিন্তা করুন, যখন আপনি সার্চ বক্সে কিছু লিখে সার্চ করেন, যেমন—”New Song”, তখন কেন শুধু নতুন গানগুলোই দেখানো হয়? আবার যদি “Bangla Natok” লিখে সার্চ করেন, কেন শুধুমাত্র নাটকের একটি লিস্ট দেখানো হয়?
কেন অন্য কোনো কন্টেন্ট, যেমন মুভি বা গান, শো করলো না? এর পেছনে রয়েছে বিশেষ কিছু কারণ, যা ইউটিউবের ক্রলার এবং ইনডেক্সার (Youtube Crawler & Indexer) এর কাজের সাথে সম্পর্কিত।
Google Bot অথবা Crawl index সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে। আর্টিকেল অনেক বড় দীর্ঘায়িত হবে। তাই নিজের ভাষায় স্বল্প পরিসরে বোঝানোর চেষ্টা করবো।
ইউটিউব ক্রলার ও ইনডেক্সার কি?
ইউটিউবের ক্রলার এমন একটি রোবট, যা আপনার ভিডিওর বিভিন্ন উপাদান, যেমন—Title, Description, এবং Tags বিশ্লেষণ করে। এটি আপনার ভিডিওতে কী কী তথ্য রয়েছে তা সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য ইউটিউবের ডেটা সেন্টারে (তথ্যভান্ডার) ইনডেক্স করে রাখে।
পরবর্তীতে, আপনার ভিডিও সম্পর্কিত কোনো বিষয়ের ওপর কেউ ইউটিউবে সার্চ করলে, ইউটিউবের এই রোবট বা অ্যালগরিদম সেই ডেটা সেন্টার থেকে প্রাসঙ্গিক ভিডিও বের করে এবং ব্যবহারকারীর সামনে শো করে।
এখানে আপনার ভিডিওকে ইউটিউবের রোবটের কাছে যতটা স্বচ্ছ ও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা যাবে, ততই আপনার ভিডিও সার্চ র্যাঙ্কিং-এ এগিয়ে থাকবে। এজন্য ইউটিউব এসইও অপরিহার্য।
ইউটিউব ভিডিও এসইও করার ধাপসমূহ
আমি ইউটিউব ভিডিও এসইও প্রক্রিয়াকে দুটি ধাপে ভাগ করেছি:
Step #1: YT SEO Online
Step #2: YT SEO Offline
চলুন এবার ইউটিউব এসইও এর অদ্যেপান্ত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি
অফলাইন ইউটিউব এসইও কি ?
অফলাইন ইউটিউব এসইও বলতে বোঝায়, ভিডিও আপলোড করার আগে যে সমস্ত কাজগুলো অফলাইনে সম্পন্ন করতে হয়, যা ভিডিওকে আরও আকর্ষণীয় ও ইউজার-ফ্রেন্ডলি করে তোলে।
এই কাজগুলো সঠিকভাবে করা হলে ভিডিওর কোয়ালিটি বৃদ্ধি পায় এবং ভিউয়ারদের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
অফলাইনে ইউটিউব এসইও করার জন্য যা করতে হবে:
- আকর্ষণীয় থাম্বনেইল তৈরি করা
- ভিডিও স্টার্টিং পয়েন্ট ঠিক করা
- ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ভয়েস ব্যবহার করা
- ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট তৈরি করা
- ভিডিও এডিটিং করা
- ভিডিওতে ইন্ট্রো ও আউট্রো যোগ করা
- ভিডিওর দৈর্ঘ্য সঠিকভাবে নির্ধারণ করা
- ফাইলের নাম রিনেম করা
- শিডিউল মেইনটেইন করা
- কমেন্ট কারিশমা করা
- সাবস্ক্রাইব ও লাইক অনুরোধ করা
উপরোক্ত প্রতিটি পয়েন্টই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো সতর্কতার সাথে অনুসরণ করলে আপনার ভিডিও আরও বেশি দর্শকপ্রিয় হবে এবং ইউটিউব অ্যালগরিদমে ভালো পারফর্ম করবে।
আর্কষনীয় থাম্বনেইল তৈরি
একটু ভাবুন, যখন আপনি ইউটিউবে প্রবেশ করেন। তখন আপনার প্রথম কাজ কি হয়। নিশ্চই ইউটবের নিউজফিড স্ক্রল করে নিচের দিকে আসবেন। আর একের থাম্বনেইল গুলো আপনার নজরে আসবে।
যখন কোনো একটি থাম্বনেইলে আপনার চোখ আটকে যাবে। ঠিক তখনি আপনি স্ক্রল করা বন্ধ করে সেই থাম্বনেইল টি পড়ার চেষ্টা করবেন। যদি থাম্বনেইলে ভালো কিছু থাকে। তারপর আপনি সেই ভিডিওতে ক্লিক করবেন, রাইট?
আপনি জানলে অবাক হবেন, ইউটিউব এসইওতে শতকরা ৫০% ভূমিকা রাখে একটা ভালো থাম্বনেইল।
কিভাবে আর্কষনীয় থাম্বনেইল তৈরি করবেন ?
নজর কাড়ানো আর্কষনীয় থাম্বনেইল তৈরি করতে হলে। প্রথমে আপনাকে background colour সিলেক্ট করতে হবে। এখানে বলে রাখা ভালো যে, আপনি যখন কালার (Colour) সিলেক্ট করবেন। তখন ২ টি কালারকে প্রাধান্য দিবেন।
- Dark Colour
- Light Colour
যখন আপনি Background Colour selection শেষ করবেন ৷ তখন আপনাকে থাম্বনেইলে TEXT যুক্ত করতে হবে। তবে মানে Thumbnail background colour এবং thumbnail text colour পরষ্পর পরষ্পরের বিপরীত।
যেমন, যদি আপনার Background Colour dark হয়। তাহলে text colour হবে light colour. ঠিক একই ভাবে আপনার Bc colour যদি Light হয়। তাহলে Text colour হবে Drak.
ক্লিকবেট থাম্বনেইল আইডিয়া
এখানে ক্লিকবেট থাম্বনেইল বলতে আমি কোনো ১৮+ পিক/টেক্সট যুক্ত করার কথা বলবো না। বরং সৎ উপায়ে কিভাবে থাম্বনেইলকে ক্লিকবেট করবেন। তা বলার চেষ্টা করবো।
পয়েন্ট-১ঃ- আমরা অনেকেই থাম্বনেইলে ভিডিওর সম্পূর্ন বিষয় লিখে দেওয়ার চেষ্টা করি। যেটা করা কখনই সমীচীন নয় ৷ থাম্বনেইলে যখন Text যুক্ত করবেন। তখন মাথায় রাখবেন, সেটি দেখার পর দর্শকদের মনে যেন কৌতুহল জন্মায় ৷ তাদের মনে যেন, আপনার ভিডিও সম্পর্কে প্রশ্ন জন্মায়। এমন কিছু কথা লিখে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
তাহলে আপনার ইউটিউব ভিডিওতে Impression click through rate বেড়ে যাবে। যদি আপনি মোবাইল দিয়ে থাম্বনেইল তৈরি করতে চান। তাহলে pixellab অথবা Picsart এই দুটো এপস ব্যবহার করবেন।
আর যদি কম্পিউটার ব্যবহার করেন। তাহলে আপনি Photoshop/Illustrator এর মতো জায়েন্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন।
এছাড়াও বর্তমানে অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট আছে ৷ যেখান থেকে খুব ভালো মানের থাম্বনেইল তৈরি করা সম্ভব যেমন Canva.
ভিডিও স্ট্যাটিং পয়েন্ট করা
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, আপনার ভিডিওর প্রথম ১৫ সেকেন্ড খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি ভিজিটররা আপনার ভিডিওতে ক্লিক করার পর প্রথম ১৫ সেকেন্ড ধৈর্য সহকারে না দেখে চলে যায়।
তাহলে ইউটিউব ভেবে নিবে, আনার ভিডিওতে ইনফরমেটিভ কিছুই নেই। তাই চেষ্টা করবেন, ভিডিওর শুরুর প্রথম ১৫ সেকেন্ড আনার ভিডিওতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেয়ার।
যেমন, আপনার পুরো ভিডিওর যে যে অংশগুলো আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে। সেই অংশগুলোকে cut করে Speed বাড়িয়ে ভিডিওর শুরুতে দিয়ে দিবেন।
তাহলে ভিজিটররা চাইলেও, আপনার ভিডিওর ঐ ১৫ সেকেন্ড স্কিপ করে যেতে পারবে না।
ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ভয়েস দেওয়া
ইউটিউব এসইও তে এটা একটা Common part. যা আমরা সবাই জানি। একটা ইউটিউব ভিডিওতে দর্শকদের মনযোগ আর্কষন করার জন্য স্বচ্ছ/পরিস্কার ভয়েসের কোনো বিকল্প নেই।
আপনার ভিডিওটি দেখতে এসে যদি ভিজিটররা আপনার audio টাকে ভালোভাবে বুঝতে না পারে। তাহলে ভিজিটররা সাথে সাথে আপনার ভিডিওকে স্কিপ করে অন্য ভিডিওতে ক্লিক করবে।
তাই চেষ্টা করবেন, যেন আপনার ভিডিওর audio টি ক্রিষ্টাল ক্লিয়ার হয়। ভয়েস edit করার জন্য ইন্টারনেটে অনেক Software/App রয়েছে। আপনি সেগুলোর মাধ্যমে আপনার ভয়েসকে ইডিট করতে পারবেন।
যেমন, কম্পিউটারে ভয়েস ইডিট করার জন্য Audacity/Camtasia ব্যবহার করতে পারবেন। আর মোবাইলে ভয়েস ইডিট করার জন্য lexis audio editor অথবা Audiolab editor ব্যবহার করতে পারবেন।
ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট তৈরি করা
ইউটিউব এসইও এর কোনো কিছুই কার্যকরী হবে না যদি আপনার ভিডিওতে ইনফরমেটিভ (তথ্যপূর্ণ) কিছু না থাকে। আপনি হয়তো ভালো থাম্বনেইল তৈরি করেছেন, ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ভয়েস দিয়েছেন, কিন্তু ভিডিওতে এমন কোনো কন্টেন্ট নেই যা দর্শকদের উপকারে আসবে।
তাহলে এসইওর সব কাজ একেবারে বৃথা হয়ে যাবে। আপনার ভিডিওতে ভিজিটররা আসবে ঠিকই, কিন্তু যখন তারা ভিডিওটি দেখবে এবং জানতে পারবে যে এতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নেই, তখন তারা খুব তাড়াতাড়ি ভিডিওটি ছেড়ে চলে যাবে।
যতক্ষণ তারা ভিডিওতে ভালো কোনো ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট না পায়, ততক্ষণ ভিডিওটি ধরে রাখবে না।
ধরুন, আপনি একটি ৫ মিনিটের ভিডিও তৈরি করলেন, কিন্তু ভিজিটররা ৩০ সেকেন্ডের বেশি দেখছেন না। তখন ইউটিউব বুঝে যাবে যে, আপনার ভিডিওতে তথ্যপূর্ণ কিছু নেই।
যদি এমনটা বারবার হতে থাকে, তাহলে ইউটিউব আপনার ভিডিওর র্যাংকিং ধীরে ধীরে কমিয়ে দিবে।
এমন এক সময় আসবে, যখন আপনার ভিডিওটি আর ভিজিটরদের নিউজফিডে শো হবে না।
তাহলে ভিডিও এসইও করার পাশাপাশি, ভিডিওটিকে যথেষ্ট ইনফরমেটিভ (তথ্যপূর্ণ) করে তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভিডিও এডিট করা
ভিডিও রেকর্ড করার সময় অনেক সময় অবাঞ্ছিত শব্দ বা কথাবার্তা চলে আসে, যা আপনার ভিডিওর মানকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই ভিডিও আপলোড করার আগে অবশ্যই সেগুলো এডিট করে কাটছাঁট করে নিতে হবে।
অনেক সময় ভিডিওতে সাউন্ড কোয়ালিটি কমে যেতে পারে, অথবা ভিডিওটি পরিষ্কার না হতে পারে। এসব অবাঞ্ছিত দিক ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা খারাপ করতে পারে, যার ফলে দর্শক ভিডিওটি শেষ না দেখে চলে যেতে পারে।
তাহলে ভিডিও আপলোডের আগে সঠিকভাবে ভিডিওটি এডিট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আপনার ভিডিও আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে এবং দর্শক পুরো ভিডিওটি দেখার পর সাবস্ক্রাইব করবে।
মানুষ নতুন ও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট দেখতে ভালোবাসে। আপনি যদি আপনার ভিডিওটি সুন্দরভাবে এডিট করে আকর্ষণীয় করেন, তাহলে আপনার সাবস্ক্রাইব এবং শেয়ার সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে।
মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য:
আপনি যদি মোবাইল ব্যবহারকারী হন, তবে Kinemaster অথবা Capcut অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি প্লে স্টোরে পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ভিডিও এডিট করতে পারবেন।
Kinemaster/Capcut দিয়ে ভিডিও এডিট করার জন্য অনেক টিউটোরিয়াল ইউটিউবে ফ্রি পাওয়া যাবে।
ল্যাপটপ বা পিসি ব্যবহারকারীদের জন্য:
আপনি যদি ল্যাপটপ বা পিসি ব্যবহারকারী হন, তবে Camtasia সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে সহজেই ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এটি এমন একটি সফটওয়্যার যা প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করতে সহায়তা করে।
ভিডিও দীর্ঘায়িত করা
কথাটা তিতা হলেও সত্য যে, ইউটিউব ভিডিও যতো বেশি দীর্ঘায়িত হবে। ইউটিউব এলগরিদমে তার দাপট ততোই বেশি থাকবে।
একটা ৩ মিনিটের ভিডিও ইউটিউব এসইওতে যতোটা না প্রভাব ফেলতে পারবে। তার চেয়ে একটা ১০ মিনিটের ভিডিও তার থেকে বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে।
এখন এর মানে এই নয় যে, ভুলভাল কাজ করে আপনি আপনার ভিডিওকে দীর্ঘায়িত করবেন। যদি এমনটা করেন,তাহলে উল্টো আপনার নিজের ক্ষতি আপনি নিজেই করবেন।
যদি সম্ভব হয়, ইনফরমেটিভ কিছু দিয়ে ভিডিওর দৈর্ঘ্য বাড়ানো যায়। তাহলে অবশ্যই Long time video তৈরি করার চেষ্টা করবেন। আর যদি তা সম্ভব না হয়,তাহলে এই টপিকটা ছেড়ে দিন।
ফাইলের নাম Rename করুন
যখন আমরা কোনো ভিডিও তৈরি করি কিংবা থাম্বনেইল তৈরি করি। তখন আমাদের ফাইল গুলো ঠিক এরকম নামে Save হয় (video_265514.mp4)/(img_6268.jpg)
কিন্তু আদতে এই নামের ফাইলগুলো কোনো অর্থ বহন করে না। যখন ইউটিউব রোবট আপনার ভিডিওর File name দেখবে। তখন বেচারি আপনার ভিডিওর নামের কোনো অর্থ বুঝতে পারবে না। যা একেবারেই সমীচীন নয়।
তাই অবশ্যই, সেই ফাইলের নামগুলো Rename করবেন। সেজন্য আপনার বাছাই করা Keyword গুলোকে File name হিসেবে Rename করতে হবে। যেমন ধরুণ: Youtube-seo-bangla-tutorial.mp4
ইউটিউব নিয়ে আরোও পড়ুন…
- ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে ?
- ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইব বাড়ানোর উপায়?
- কিভাবে ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করা যায়?
শিডিউল মেইনটেইন করা
এই বিষয়টি ইউটিউব এসইও তে তেমন একটা প্রভাব না ফেললেও। আপনাকে এই শিডিউল মেইনটেইন করা উচিত।
যেমন, আপনি কোন কোন সময়গুলোতে ভিডিও আপলোড করেন। কোন কোন পরিস্থিতিতে আপনি ভিডিও আপলোড করেন না। সে সম্পর্কে ভিজিটরদের স্বচ্ছ ধারনা থাকা উচিত।
যেমন ধরুন, আপনি ইউটিউব আপডেট নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন। তারমানে ভিজিটরদের আগে থেকেই জানা থাকলো যে ইউটিউবের নতুন কোনো আপডেট আসলে। আপনার চ্যানেলে সেই সম্পর্কে ভিডিও পাওয়া যাবে।
এছাড়াও মাসিক কিংবা সাপ্তাহিক একটা শিডিউল তৈরি করবেন ৷ কোন কোন দিনগুলোতে আপনি ভিডিও আপলোড করবেন ৷ তার একটা লিষ্ট তৈরি করে রাখবেন।
কমেন্ট কারিশমা করা
এটি শুনতে কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও,বাস্তবিক অর্থে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, যখন আপনার ভিডিওতে ভিজিটররা কমেন্ট করবে। তখন তা Youtube algorithm এ পজেটিভ সিগন্যাল প্রদান করবে ৷
তো আপনাকে ভিডিওতে এমন কিছু করতে হবে। যেন ভিজিটররা আপনার ভিডিওতে কমেন্ট করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি করবেন টা কি?
ইউটিউব ভিডিওতে ভিজিটরদের কমেন্ট করার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। যেমন, ভিডিওতে ভিজিটরদের উদ্দেশ্য প্রশ্ন করুন।
কিংবা তারা কিরকম টপিকে ভিডিও চায়, কোন বিষয়ে জানতে চায়। সেগুলো কমেন্ট করতে বলুন।
সাবস্ক্রাইব ও লাইক ভিক্ষা করা
শুনে হাসি পাচ্ছে? কিন্তু হাসি পেলেও এই কাজটি আপনাকেও করতে হবে। যেমন প্রতিটা ইউটিউবার করে থাকে। কিন্তু আপনি অন্যদের থেকে একটা ভিন্ন উপায়ে সাবস্ক্রাইব চাইবেন ৷ যেহুতু আপনি একজন ইউটিউবার।
সেহুতু আপনার নিশ্চই কোনো না কোনো ক্রিয়েটিভিটি আছে। আপনার সেই ক্রিয়েটিভিটিকে কাজে লাগান।
ভিউয়ারদের সাবস্ক্রাইব করার পাশাপাশি আপনার ভিডিওতে লাইক ও শেয়ার করতে বলুন। তাহলে দেখবেন, যদি ১০০ জন আপনার ভিডিও দেখে। তাহলে অন্ততপক্ষে ১০ জন হলেও আপনার কথা শোনার পর। আপনার ভিডিওতে লাইক দিবে।
যাক, আপনি আসলে একটা YouTube video কে অফলাইনের মাধ্যমে কিভাবে এসইও করবেন। তা মোটামুটি জেনে গেছেন। চলুন, এবার আপনি জানবেন, কিভাবে অনলাইনের এর মাধ্যমে ইউটিউব এসইও করবেন।
অনলাইন ইউটিউব এসইও করার উপায়
ইউটিউব ভিডিওকে এসইও করার জন্য প্রথমে আপনাকে Online SEO সম্পর্কে জানতে হবে। অনলাইন এসইও এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, Keyword Research.
একটা ইউটিউব ভিডিও Rank করার পেছনে Keyword research সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি আসলে কোন টপিকে/বিষয়ে ভিডিও তৈরি করবেন। তা keyword research এর মাধ্যমে সহজেই বুঝতে পারবেন।
কিভাবে Keyword research করবেন?
আপনি দুই ভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন।
- ইউটিউব/গুগলের মাধ্যমে।
- টুলসের মাধ্যমে।
ধরুন আপনি “অনলাইন ইনকাম” সম্পর্কে ভিডিও তৈরি করবেন। তো এখন আপনাকে এই রিলেটেড কিওয়ার্ড খুজে নিতে হবে।
তারজন্য প্রথমে Youtube এ গিয়ে যদি সার্চ করেন, “অনলাইন ইনকাম”। তাহলে এই বিষয়ে মানুষ ইউটিউবে কি কি লিখে সার্চ করে। সেগুলোও দেখতে পারবেন। যেমন,
- ফ্রি টাকা ইনকাম
- অনলাইন ইনকাম বিকাশ পেমেন্ট
- ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়
- অনলাইন ইনকাম অ্যাপ
- কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়
- অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট
- অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
- টাকা আয় করার apps
ঠিক এভাবে Google এ সার্চ করেও এই রিলেটেড কিওয়ার্ড গুলো খুজে নিতে পারবেন।
তবে মনে রাখবেন, প্রথমত আপনাকে Focus keyword সিলেক্ট করতে হবে। এর পাশাপাশি আপনার Helping keyword গুলো সিলেক্ট করতে হবে।
যেমন, আপনি যদি অনলাইন ইনকাম নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন। তাহলে আপনার মূল কিওয়ার্ড/Focus keyword হবে, ” অনলাইন ইনকাম”।
আপনি আরো পড়ুন…
- আর্টিকেল অন পেজ এসইও করে লেখার উপায়
- ই-কমার্স কি ? কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করবেন ?
- ফেসবুক মার্কেটিং মানে কি? কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন?
এর পাশাপাশি Helping keyword হিসেবে থাকবে, Payment by BKash/by mobile/for students etc. তবে যদি আপনি আরও Advanced লেভেলের কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে চান।
তাহলে বিভিন্ন টুলসের Help নিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনে অনেক Keyword research tools এভিলেবল আছে। তাদের মধ্যে Free/paid tools গুলোর নাম হলোঃ
- Google keyword planner(Free)
- Ahrefs(Paid)
- Serush(Paid),
- Google trands(Free)
এই টুলসগুলো দিয়ে কিওয়ার্ডের পাশাপাশি কোন কিওয়ার্ডের Search value কত। সেটিও দেখতে পারবেন।
[Pro Tips:– যেসব কিওয়ার্ডের search value বেশি।সেইসব কিওয়ার্ড নিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন]
অপটিমাইজ Video Title and Description
ইউটিউব ভিডিও এসইও করার জন্য ভিডিওর টাইটেল বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মোটকথা যখন আপনার ভিডিওটি ইউটিউব নিউজফিডে শো করবে।
তখন দর্শকরা প্রথমে তাকাবে আপাার Thumbnail এর দিকে। এর পর আপনার ভিডিওর Title এ কি দেওয়া আছে। সেটি দেখার পর আপনার ভিডিওতে Click করবে।
যদি আপনার Video Title অপটিমাইজ না হয়।তাহলে ভিজিটরদের নিউজফিডে আপনার ভিডিওটি শো করলেও। তারা Skip করে চলে যাবে।
কিভাবে Video title optimize করবেন?
সর্বদা চেষ্টা করবেন যেন, ভিডিওর Title ৪৫-৫০ শব্দের মধ্যে হয়।অনেকে আছেন, যারা অনেক বড় টাইটেল লিখে থাকেন।
কিন্তু ভিডিওর টাইটেল যদি হাবিজাবি কথা লিখে ভর্তি করেন। তাহলে আপনার ভিডিওতে CTR এর হার ক্রমশ হ্রাস পেতে শুরু করবে।
টাইটেলে কিওয়ার্ড এর ব্যবহার
আপনার ভিডিওর টাইটেলে অবশ্যই আপনার Focus Keyword থাকতে হবে। যেমন, আপনি “অনলাইন ইনকাম”- নিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন।
তাহলে আপনার Video title এর শুরুতে Main Focus Keyword থাকতে হবে। তারপর Helping keyword দিতে হবে। যেমন,
” খুব সহজে অনলাইন ইনকাম করুন | Payment by bkash ” দেখুন এখানে মুল কিওয়ার্ডের পাশাপাশি হেল্পিং কিওয়ার্ডের ব্যবহার করা হয়েছে।
ভিডিও Description অপটিমাইজেশন করুন
ইউটিউব ভিডিও এসইও করার জন্য Video Description এর অবদান 1%-5%. আপনি সর্বদা চেষ্টা করবেন, Video description এর শুরুর ২৫ শব্দের মধ্যে যেন আপনার Main/Focus Keyword থাকে।
এছাড়াও ভিডিও ডেসস্ক্রিপশনে আপনার আগের ভিডিওগুলোর লিংক দিয়ে রাখবেন৷ এর ফলে ভিজিটররা আপনার একটি ভিডিও থেকে অন্য ভিডিওগুলোও দেখতে চাইবে।
ভিডিওতে সঠিক Tag এর ব্যবহার
অনেকের ধারনা মতে ইউটিউব এসইও করতে ক্ষেএে Tag 50% অবদান রাখে। তাই অনেক ইউটিউবার বেশি ভিউয়ের আশায় ইউটিউবে Viral/Rank হওয়া ভিডিওগুলোর Tag কপি করে। নিজের ভিডিওতে বসিয়ে দেয়।
কিন্তু ইহা এক ব্যর্থ চেষ্টা বৈকি কিছু নয়। কারন যদি Viral হওয়া ভিডিওর Tag কপি করে নিজের ভিডিওতে বসিয়ে দিলেই ভিডিওর Ranking বাড়তো। তাহলে ইউটিউব সেক্টরে কেউ আর অসফল হতো না।
সত্যিকার অর্থে, Tag ব্যবহার করার মূল উদ্দেশ্যে হলো। আপনার ভিডিওর মূল সারসংক্ষেপ সম্পর্কে YouTube Robot কে বোঝানো। আসলে আপনার ভিডিওটি কোন Topic (বিষয়) এর উপর Base করছে। সেটি বোঝানোর জন্য Tag ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে কি Rank হওয়া ভিডিওর Tag নিজের ভিডিওতে বসিয়ে দিলে কোনো বেনিফিট পাওয়া যাবে না? -হুমমম, যদি আপনি এই মহৎ কাজটি করতে পারেন। তাহলে একসময়ে আপনার ভিডিওটি Suggested video তে শো করবে।
[Alert: অন্যের Tag কখনইও Full copy করে নিজের ভিডিওতে দিবেন না। তাহলে misleading metadata claim আসার সম্ভাবনা অনেক অংশেই বেড়ে যাবে]
ভিডিও কিভাবে Tag Optimise করবেন?
সঠিক YouTube Tag খুজে পাওয়ার মতো। Tag এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কেও আপনার ধারনা থাকতে হবে। ইউটিউবের Tag সবসময় ছোট আকারে দেয়ার চেষ্টা করবেন।
সর্বোচ্চ ২-৪ ওয়ার্ডের মধ্যে হলে ভালো হয়। যেমন,ধরুর আপনি “Online Income’- নিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন। তাহলে আপনার Tag গুলো হবে,
- #Online Income
- #online income bd
- #online incom site
- #online income bikash payment
[pro Tips: অনেকেই আছেন যারা ভিডিওর Title কে সরাসরি Tag এ বসিয়ে দেন। যা ইউটিউব এসইও তে নেগেটিভ ইফেক্ট ফেলে থাকে ]
ইউটিউব ভিডিও Social Share করুন
আপনার ভিডিও যতো বেশি Social media গুলোতে share করা হবে। ইউটিউব এসইওতে তা ততোবেশি পজেটিভ ইফেক্ট ফেলবে।
যখন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনার ভিডিওর Link building হবে। তখন YouTube Bot/Crawler ভাববে আপনার ভিডিওতে নিশ্চই ভালো কিছু আছে। তাই এতো সোশ্যাল শেয়ার হচ্ছে।
আপনার ভিডিও আপলোড করার পর। প্রথমে সেই ভিডিওর Link কপি করে বিভিন্ন Social media তে শেয়ার করুন। যেমন, Facebook, Twitter,Quora,Linkdin,Tumblar ইত্যাদি।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরনঃ অনেকেই এই Social media share স্ট্রাটেজিকে সঠিকভাবে বুঝতে না পেরে ভুলভাল কাজ করে থাকে। তবে মনে রাখবেন, যদি যদি এই টিপসকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারেন।
তাহলে উল্টো আপনার ইউটিউব এসইও তে নেগেটিভ ইফেক্ট ফেলবে।
এমন অনেকেই আছেন, যারা ভিডিওতে ভিউয়ের আশায় ফেসবুকের unrelated group বা page এ link share করে।
যেমন, ফেসবুকের বিভিন্ন পোষ্টের কমেন্টে কিংবা বড় বড় FB page এ গিয়ে Comment section এ নিজের YouTube video link share করে থাকে।
এই কাজগুলো আসলে social share না বলে spamming বলা যায়। আর যদি আপনি এই স্প্যামিং রিলেটেড কোনো কাজ করেন। তাহলে তা আপনার ইউটিউব এসইও তে নেগেটিভ ইফেক্ট ফেলবে।
অলস টিউবার ও ইউটিউব এসইও
এবার একটা মজাদার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো৷ যদি আপনি আমার মতো অলস হয়ে থাকেন। পাশাপাশি ইউটিউবিং ও করে থাকেন।
তাহলে আপনার জন্য থাকছে ইউটিউব এসইও নিয়ে শর্টকার্ট কিছু টেকনিক। যে টেকনিকগুলো ফলো করলে। আপনিও হতে পারবেন একজন SEO Expart. তো চলুন এবার কিছু শর্টকার্ট সম্পর্কে জেনে নেই।
ইউটিউব শর্টকার্ট এসইও টেকনিক
যেহেতু আপনি অলস মানুষ, সেহেতু Keyword Research এর ঝামেলার কাজ না করেই কীভাবে খুব সহজে High Search Volume Keyword খুঁজে পাবেন, সেটি আপনাকে জানতে হবে।
সেজন্য প্রথমে আপনার নিশ রিলেটেড বড় বড় ইউটিউব চ্যানেলগুলো খুঁজে বের করুন। তারপর সরাসরি চলে যান Video অপশনে।
সেখানে Most View অপশনটি সিলেক্ট করুন। এরপর আপনি সেই ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন, যেগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিউ হয়েছে।
ব্যাস! বিনা পরিশ্রমে High Ranking Keyword পেয়ে গেলেন।
এবার আপনাকে Tag Manage করতে হবে, তাই তো?
এখন আপনি আপনার নিশ রিলেটেড একটি পপুলার ভিডিওর লিংক কপি করুন।
তারপর সরাসরি চলে যান Google মামার কাছে। এবার সার্চ করুন:
“youtube video link to find tag”
সার্চ করার পর অনেকগুলো ওয়েবসাইট আসবে। আপনি যেকোনো একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
এখন যে ভিডিওর লিংকটি কপি করেছেন, সেটি সেখানে পেস্ট করে সার্চ করুন। দেখবেন, ঐ ভিডিওতে যে ট্যাগগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর সম্পূর্ণ তালিকা দেখাবে।
আপনি সেই Tag গুলো কপি করুন। তারপর যেকোনো Notepad-এ পেস্ট করুন।
তবে মনে রাখবেন, ভুলেও এই ট্যাগগুলো সরাসরি আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করবেন না।
যদি করেন, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সেই ট্যাগগুলোকে হালকা-পাতলা ইডিট করুন। এরপর সেই Tag গুলো আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করুন।
থাম্বনেইল তৈরি করুন সহজে:
বিনা পরিশ্রমে ভালো মানের থাম্বনেইল তৈরি করতে চান?
১. আপনার Browser থেকে যান Canva.com-এ।
২. সেখান থেকে আপনার পছন্দমতো Template সিলেক্ট করুন।
৩. বানিয়ে ফেলুন আকর্ষণীয় থাম্বনেইল।
তারপর কী করবেন?
এখন আর আপনাকে কিছুই করতে হবে না। শুধু শকুনের মতো চেয়ে চেয়ে দেখুন আর লক্ষ্য করুন, আপনার ভিডিওতে আশানুরূপ ভিউ আসছে কিনা।
আশা করি ইউটিউব নিয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন।
Youtube video seo কি, ইউটিউবে ইনকাম করার নিয়ম, ইউটিউব চ্যানেল থেকে, ইউটিউব চ্যানেল বিক্রি, ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল, ইউটিউব চ্যানেল সেটিং, ইউটিউব এর ব্যবহার, ইউটিউব ট্যাগ কি? এই সকল আমাদের এই আর্টিকেলে বলা হয়েছে।
আমাদের শেষকথা
একটা বিষয় সবসময় মনে রাখা উচিত এসইও করলেন আর সাথে সাথেই রেজাল্ট পেলেন, ব্যাপারটা আসলে এমন নয়। এসইও সেক্টরে কাজ করতে গেলে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।
ইউটিউব এসইও? এটি তো আরও বেশি ধৈর্যের বিষয়। আপনি হয়তো অনেক কষ্ট করে রাত জেগে একটি ভিডিও তৈরি করলেন। তারপর ইউটিউব এসইওর সমস্ত নিয়ম মেনে সেটি আপলোড করলেন।
তবে ভিডিও আপলোড করার পরই মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ চলে আসবে, এমন আশা করবেন না। কারণ ইউটিউব একটি প্রোগ্রামিং রোবট, এবং এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে প্রোগ্রামের আপডেট বা ডেটা প্রসেসিং হতে।
মনে রাখবেন, সফলতা ধৈর্যশীলদেরই পুরস্কৃত করে। “রাত যত গভীর হয়, প্রভাত ততই নিকটে আসে।” তাই হতাশ না হয়ে নিজেকে প্রতিনিয়ত উন্নত করার জন্য কাজ করে যান। একদিন সফলতা আপনার কাছে ধরা দেবেই।