Rules for changing voter ID card image and signature: বিভিন্ন সময়ে আমাদের ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ছবি অথবা স্বাক্ষর পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়।
তো যদি আপনারও ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে ছবি পরিবর্তন করতে চান। তাহলে আপনাকে কোন কোন কাজ গুলো করতে হবে এবং কিভাবে আপনি খুব দ্রুততার সাথে এই কাজটি করতে পারবেন।
সেই বিষয় গুলো জানিয়ে দেওয়ার জন্য আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন ফরম ও Nid ছবি পরিবর্তন নিয়ে।
কেন ভোটার আইডি কার্ডের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করবেন?
আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আমি আপনাকে ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানিয়ে দিব।
তবে তার আগে আমাদের একটা বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। সেটি হল, কেন আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে হয়।
যদিও বা ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ছবি অথবা স্বাক্ষর পরিবর্তন করার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে অধিকাংশ মানুষ এর ক্ষেত্রে বিশেষ একটি কারণ রয়েছে।
আর সেই কারণ টি হল, আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে এমন অষ্পষ্ট ছবি রয়েছে। যে ছবি দেখলে তাকে কখনোই চেনা সম্ভব হয় না।
আপনি আরোও দেখুন…
কেননা ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে যে ছবি গুলো থাকে, সে গুলো অধিকাংশ সময় অস্পষ্ট হয়।
এর পাশাপাশি যদি আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ভুল স্বাক্ষর প্রদান করেন। সে ক্ষেত্রে ও আপনাকে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা স্বাক্ষর পরিবর্তন করার প্রয়োজন হবে।
আর আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা স্বাক্ষর অথবা ছবি দুটোই পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে।
আর এবার আমি আপনাকে সেই নিয়ম গুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। এবং আপনি অবশ্যই এই নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে ফলো করার চেষ্টা করবেন।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম
আপনি যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ছবি পরিবর্তন করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে আপনার নিজস্ব ভোটার এলাকার যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন অফিস রয়েছে, আপনাকে সেখানে যেতে হবে।
আর যখন আপনি আপনার ভোটার এলাকার নির্বাচন অফিসে যাবেন। তারপরে আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। যে ফরম এর নাম হল, জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফরম – ২.
আর যখন আপনি এই ফরম পূরণ করবেন। তারপরে আপনাকে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার জন্য সংশোধন ফি প্রদান করতে হবে।
আর এই ফি বাবদ আপনাকে ভ্যাট সহ মোট ২৩০ টাকা জমা দিতে হবে। এবং উক্ত টাকা আপনি আপনার মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করে দিতে পারবেন।
এবং আপনি যখন উপরের এই কাজ গুলো করবেন। তারপরে আপনার এই আবেদন টি জেলা নির্বাচন অফিসার পুনরায় যাচাই বাছাই করবে।
সবশেষে তারা যদি আপনার আবেদন টি গ্রহণ করে। তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
যখন আপনাকে মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএস করে জানানো হবে। তারপরে আপনি অনলাইন থেকে আপনার নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কিন্তুু যদি আপনি ইতি মধ্যেই স্মার্ট কার্ড পেয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে পুনরায় স্মার্ট কার্ড এর জন্য রি ইস্যুর আবেদন করতে হবে।
এবং এই কাজ গুলো আপনি যাতে করে খুব সহজ ভাবে করতে পারেন। সে কারণে এবার আমি ধাপে ধাপে আপনাকে সবকিছু দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
প্রথম ধাপঃ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ২ পূরণ করুন
সবার প্রথমেই আপনাকে আপনার এনআইডি কার্ড এর মধ্যে থাকার ছবি পরিবর্তন করার জন্য তথ্য সংশোধন ফরম -২ ডাউনলোড করে নিতে হবে।
এবং উক্ত ফর্ম টি দেখতে কেমন হবে তা আপনি নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন। মূলত এখানে অনেক ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিষয় থাকবে।
আর উক্ত ফরম এর মধ্যে যে অপ্রয়োজনীয় বিষয় গুলো থাকবে। সে গুলো আপনাকে কলম দিয়ে কেটে দিতে হবে।
উপরে আপনি যে ছবি টি দেখতে পাচ্ছেন, সেটা মূলত তথ্য সংশোধন ফরম। যেখানে আপনার যাবতীয় তথ্য গুলো দেওয়ার পরে আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ছবি কিংবা স্বাক্ষর পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
দ্বিতীয় ধাপঃ ফি পরিশোধ করুন
যেহেতু আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ছবি এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চান।
সেহেতু এটি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা তথ্য ও সংশোধনীর মধ্যে পড়বে। আর যখন আপনি এই কাজ টি করতে যাবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে।
আর বর্তমান সময়ে আপনি যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ছবি অথবা স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চান। তাহলে আপনাকে সংশোধিত ফি হিসেবে মোট ২৩০ টাকা প্রদান করতে হবে।
এবং এই টাকা আপনি বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করে দিতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই ফি পরিশোধ করে দেন।
তাহলে আপনার নিকট কোন ধরনের পেমেন্ট রশিদ থাকবে না। বরং আপনি যখন টাকা পরিশোধ করবেন তখন আপনার যে ট্রানজেকশন আইডি থাকবে।
সেই আইডি উল্লেখ করে আপনি আপনার পেমেন্ট পরিশোধ করার সত্যতা যাচাই করতে পারবেন।
তৃতীয় ধাপঃ উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন জমা দিন
যখন আপনি উপরের কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারবেন। তারপরে আপনার নিকট থাকা ফরম টি পুনরায় উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।
এবং যখন আপনি এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো জমা দিবেন। তখন আপনার নিকট থাকা বর্তমান সময় এর জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপি যুক্ত করে দিতে হবে।
তারপর সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে আপনার এই আবেদন টি পুনরায় যাচাই বাছাই করা হবে। এবং যদি তাদের কাছে আপনার আবেদন টি গ্রহণযোগ্যতা পায়।
তারপরে তারা ভোটার আইডি কার্ড এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আপনার আবেদন টি প্রেরণ করবে। আর তারপরে আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করার কাজ শুরু হবে।
চতুর্থ ধাপঃ সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করুন
তো যখন আপনার এই ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর বা ছবি পরিবর্তন করা হবে। তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এবং আপনি যখন এই এসএমএস টি পাবেন। তখন অনলাইন থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি পুনরায় ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কিন্তু যাদের স্মার্ট কার্ড রয়েছে, তারা তাৎক্ষণিক ভাবে নতুন করে স্মার্ট কার্ড পাবেন না।
কেননা আপনি যদি স্মার্ট কার্ড পেতে চান, তাহলে আপনাকে পুনরায় স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য রি ইস্যুর আবেদন করতে হবে। এরপর নির্ধারিত সময়ে আপনি আপনার স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর
উপরের আলোচনা তে আমি ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।
তবে এর বাইরেও আমাদের মনে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন রয়েছে। আর এবার আমি সেই সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। যেমন,
Q: কিভাবে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করব?
A: যদি আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ছবি পরিবর্তন করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে পরিচয় পত্র সংশোধন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর সেটি পূরণ করার পরে আপনাকে পরিচয় পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ করে দিতে হবে। এবং এই যাবতীয় কাগজপত্র গুলো আপনাকে নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।
তাহলেই আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে পারবেন।
Q: ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করলে স্মার্ট কার্ড পাওয়া যাবে?
A:? না, আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে থাকা ছবি কিংবা স্বাক্ষর পরিবর্তন করেন। তাহলে আপনি তাৎক্ষণিক ভাবে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন না।
কিন্তু আপনি যদি স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে চান, তাহলে আপনাকে পুনরায় জাতীয় পরিচয় পত্র রি ইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। আর তারপরে আপনি নির্ধারিত হওয়ায় আপনার স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
আমাদের শেষকথা
কোন কারনে আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে থাকা ছবি পরিবর্তন করতে চান। কিংবা আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে থাকা স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চান।
তাহলে আপনাকে কোন নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে। এবং এই সংশোধন করার জন্য আপনাকে কত টাকা ব্যয় করতে হবে। সে বিষয় গুলো নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আর আমার দীর্ঘ বিশ্বাস রয়েছে যে, আপনি যদি আজকের এই পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন।
তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। তবে এরপরও যদি আপনার কোন ধরনের সমস্যা হয়, তাহলে আপনার সমস্যা টি নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
এর পাশাপাশি আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে অজানা তথ্য খুব সহজ ভাষায় জানতে চান।
তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করার চেষ্টা করবেন। আর ধন্যবাদ এতক্ষণ থেকে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।