ব্লগ মানে কি ? বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করার উপায় 

আপনি যদি নতুন ব্লগিং শুরু করতে চান এবং চিন্তা করছেন যে বাংলা ব্লগসাইট থেকে কি আয় করা সম্ভব? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।

আপনার যদি ভালো ইংরেজি না-ও জানা থাকে, তবুও আপনি বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে জানতে হবে ব্লগ মানে কি এবং ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার উপায়।

একটি ব্লগসাইট হতে পারে আপনার সারাজীবনের আয়ের উৎস। আপনি যদি মানসম্মত আর্টিকেল লিখতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে আপনার প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

কারণ ব্লগ থেকে আয় এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে যারা নতুন ব্লগিং শুরু করেছেন, তাদের জন্য।

আপনি যদি ব্লগিংয়ে সঠিকভাবে সময় ও শ্রম দেন, তাহলে আপনি একটি হাই প্রোফাইল জবের থেকেও বেশি আয় করতে পারবেন। একটি ব্লগসাইট থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করা সম্ভব।

তার মধ্যে গুগল এডসেন্স সবচেয়ে জনপ্রিয়। আপনি বাংলাদেশ এবং ভারতকে টার্গেট করে বাংলা ব্লগসাইট তৈরি করতে পারেন।

আপনি যদি নিয়মিত বাংলা ব্লগসাইটে সময় দেন এবং ভালো মানের আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারেন, যা মানুষের জন্য দরকারি এবং সঠিক তথ্য প্রদান করে, তবে একসময় আপনার ব্লগে অনেক ভিজিটর পাবেন।

আর যত বেশি আপনার বাংলা ব্লগসাইটে ভিজিটর পাবেন, তত বেশি ইনকাম হবে।

যখন থেকে এডসেন্সে বাংলা ব্লগ সাইটগুলো সাপোর্ট করা শুরু হয়েছে, তখন থেকেই এডসেন্স খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম করা অন্যান্য মাধ্যমের তুলনায় অনেক সহজ এবং নিরাপদ।

কিন্তু লিখা শুরু করার আগে আপনাকে জানতে হবে ব্লগসাইট কি এবং একটি ব্লগসাইট কিভাবে তৈরি করা যায়।

আপনার জন্য আরো…

ব্লগসাইট মানে কি?

অনেকের কাছে ব্লগ হলো এমন একটি মাধ্যম, যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আয় করতে পারবেন। আবার অনেকে মনে করেন, ব্লগ হলো একটি জ্ঞানের ভাণ্ডার। আসলে বিষয়টি তা নয়।

ব্লগ হলো একটি ডায়েরির মতো জায়গা, যেখানে আপনি আপনার মনের মাধুরী মিশিয়ে যা খুশি তা লিখতে পারেন।

যদি বইয়ের ভাষায় বলি, তাহলে ব্লগ হলো ইন্টারনেটে অবস্থিত এমন একটি স্থান, যেখানে আপনি আপনার মত প্রকাশ অথবা বিভিন্ন ধরনের তথ্য শেয়ার করতে পারেন।

ব্লগ (Blog) হলো একটি ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ হলো ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত দিনলিপি। আপনার ব্লগে আপনি আপনার মনমতো যেকোনো কিছু যেমন—কোনো গল্প, কোনো বিষয়ে টিউটোরিয়াল, বিভিন্ন মজার এসএমএস, কবিতা, গান, সংবাদ, যেকোনো কিছুই লিখতে পারেন।

তবে সেটা নির্ভর করে আপনার সেই বিষয়ের প্রতি আগ্রহ কেমন। কারণ, যদি লেখার মধ্যে আগ্রহ না থাকে, তাহলে ব্লগিং করে আপনি কখনোই সাফল্য লাভ করতে পারবেন না।

আপনি লেখালেখির মাধ্যমে বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করতে পারবেন নানা উপায়ে।

তবে যাই লিখুন না কেন, সেই লেখায় আপনার আগ্রহ থাকতে হবে এবং সাবলীল ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন লেখা হতে হবে।

তাহলেই মানুষ আপনার ব্লগ পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে এবং আপনি বেশি বেশি ভিজিটর পাবেন। যার ফলে আপনার আয়ের পরিমাণও বাড়তে থাকবে।

ব্লগ সাইট বানাতে কত টাকা লাগে?

একটি ব্লগ সাইট বানাতে খুব বেশি খরচ হয় না। তবে একটি ওয়েবসাইট তৈরিতে কিছু জিনিস ক্রয় করতে হয়, যা ছাড়া ওয়েবসাইট বানানো সম্ভব নয়। যেমন: ডোমেইন, হোস্টিং, থিম, প্লাগ-ইন ইত্যাদি।

আপনি যদি ব্লগার প্ল্যাটফর্মে ব্লগ সাইট বানান, তাহলে শুধুমাত্র একটি ডোমেইন কিনলেই ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।

কিন্তু যদি আপনি ওয় WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট বানান, তাহলে থিম এবং প্লাগ-ইন-এর জন্য টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়ে না, কারণ এগুলো অনেক ক্ষেত্রে ফ্রিতেই পাওয়া যায়।

ডোমেইন কি |ডোমেইন মানে কি

ডোমেইন হলো একটি সাইটের নাম। যেমন ধরুন www.google.com, এখানে google.com হলো ডোমেইন নাম। একটি ওয়েবসাইট বানানোর জন্য প্রথমেই দরকার হয় একটি নাম। ডোমেইন বিভিন্ন ধরনের হয়।

যেমন: .com, .org, .net, .info, .xyz ইত্যাদি।

আমাদের দেশে, আপনি এই ডোমেইনগুলো পাবেন ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে।

আপনি যদি নতুন ব্লগিং শুরু করতে চান এবং কোনো ধরনের পেমেন্ট করার উপায় না থাকে, তবে বাংলাদেশে অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা বিকাশ, রকেট, নগদ এর মাধ্যমে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করে।

ওয়েব হোস্টিং কি ? কেন হোস্টিং লাগবে ?

মনে করুন আপনি একটি বাড়ি বানাবেন। এখন বাড়ি বানাতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে কিনতে হবে একটি জমি। ঠিক তেমনি, একটি ওয়েবসাইট বানাতে হলেও আপনাকে সাইটটি রাখার জন্য একটি জমি কেনা লাগবে। আর সেই জমিকেই বলা হয় ওয়েব হোস্টিং।

অনেকে বলতে পারেন, “হোস্টিং কেন প্রয়োজন?” আসলে, ওয়েবসাইটের ডেটাগুলো স্টোর করার জন্য একটি স্পেস দরকার। সেজন্যই হোস্টিং প্রয়োজন।

আপনি যেহেতু একটি ব্লগ বানাবেন, সেহেতু আপনার ব্লগে অবশ্যই কিছু টেক্সট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি থাকতে পারে। সেজন্য এগুলো রাখার জন্য হোস্টিং অবশ্যই প্রয়োজন।

হোস্টিং মূলত ৫ প্রকারের হয়ে থাকে

ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার এবং কোন ওয়েব হোস্টিং আপনার জন্য ভালো হবে, তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি পড়লে বুঝতে পারবেন কোনটি আপনার ব্লগসাইটের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।

শেয়ার হোস্টিং কি? (Shared Hosting)

আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না থাকে, তাহলে আপনি শেয়ার হোস্টিং নিতে পারেন। এই হোস্টিংটি অন্য কারো সাথে শেয়ার করে নিতে হয়।

প্রাথমিক অবস্থায় শেয়ার হোস্টিং নিলে কোনো সমস্যা হবে না। তবে, নেয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যে আপনি কোথা থেকে হোস্টিংটি নিচ্ছেন।

তারা আপনাকে কীভাবে সার্ভিস দিচ্ছে, আপটাইম কেমন, মানি-ব্যাক গ্যারান্টি আছে কিনা—এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন।

যদি আপটাইম ৯৯.৯৫%-এর নিচে হয়, তাহলে তাদের থেকে হোস্টিং নিবেন না। আমাদের দেশে ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে শেয়ার হোস্টিং পাওয়া যায়।

ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং (WordPress Hosting)

শেয়ার হোস্টিংয়ের চেয়ে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং ভালো। তবে এটি একটি প্রকার শেয়ার হোস্টিং। কিন্তু শেয়ার হোস্টিংয়ের তুলনায় ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং বেশি ফাস্ট এবং সিকিউর।

এছাড়া এটি অপ্টিমাইজড হওয়ায় আপনার ব্লগটি দ্রুত লোড হবে, এবং সার্ভার ডাউন হওয়ার ঝুঁকিও থাকবে না।

তবে, এখানে শুধু ওয়ার্ডপ্রেসের স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করা যাবে না। অন্যান্য হোস্টিংয়ের তুলনায় ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংয়ের দাম একটু বেশি। আমাদের দেশে এর দাম ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে।

ক্লাউড হোস্টিং (Cloud Hosting)

যখন দেখবেন আপনার সাইটের ট্রাফিক অনেক বেশি হয়ে গেছে এবং সাইটটি আর লোড নিতে পারছে না, তখন ক্লাউড হোস্টিংয়ের প্রয়োজন পড়বে।

এই হোস্টিংটি অন্যান্য হোস্টিংয়ের তুলনায় অনেক বেশি ফাস্ট কাজ করে। কারণ ফাইলগুলো ক্লাউডে (ইন্টারনেটে) থাকবে। আমরা যেমন গুগল ড্রাইভে ফাইল রাখি, ঠিক তেমনি।

এর দাম নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না, কারণ আপনি যতটা ব্যবহার করবেন, বিল ততটা আসবে।

ভিপিএস হোস্টিং (VPS Hosting)

আপনার ব্লগটি যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠবে, তখন আপনি এই হোস্টিংটি নিতে পারেন। এই হোস্টিংটি ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি লোড নিতে সক্ষম।

তাহলে, আপনার ওয়েবসাইটটি দ্রুত লোড হবে। এই হোস্টিংয়ের বিল প্রতি মাসে দিতে হয়, এবং এর দাম ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে।

ডেডিকেটেড হোস্টিং (Dedicated Hosting)

ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ে আপনার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। উদাহরণস্বরূপ: অন্যান্য হোস্টিংয়ে আপনাকে একটি বিল্ডিংয়ের একটি রুম দেয়া হচ্ছিল, আর এখানে আপনি পুরো একটি বিল্ডিং পেয়ে যাচ্ছেন।

আপনার সাইটে যতই ট্রাফিক আসুক না কেন, কোনো সমস্যা হবে না।

তবে, এর দামটা একটু বেশি। আমাদের দেশে ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের জন্য প্রতি মাসে ১৫০০০ থেকে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।

সব মিলিয়ে মোট খরচ:

  • ডোমেইন: ১০০০-২০০০ টাকা

  • হোস্টিং: ১৫০০-২৫০০ টাকা

  • থিমস: ফ্রি

  • প্লাগ-ইন: ফ্রি

কিভাবে ব্লগসাইট বানাবেন ?

একটি ব্লগ সাইট আপনি অনেক ভাবে বানাতে পারবেন। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যমটি হলো WordPress। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে একটি সেল্ফ হোস্টেড ওয়ার্ডপ্রেস (Self Hosted WordPress) ব্লগ বানাতে চান তাহলে এখানে দুইটি উপায় আছে।

একটি হচ্ছে wordpress.com ব্যবহার করে অন্যটি হচ্ছে wordpress.org ব্যবহার করে। এই দুটির মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। 

WordPress.com
  • এই ওয়ার্ডপ্রেস আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট হোস্ট করবে
  • আপনার প্রকাশিত ফাইলগুলির উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ কম হবে
  • অর্ডার করা প্যাকেজের উপর নির্ভর করে আপনার প্রতিদিনের ব্যাকআপ, ভাইরাস সুরক্ষা এবং সম্পূর্ণ ব্লগ রক্ষণাবেক্ষণ চলবে 
WordPress.org
  • আপনার ওয়েবসাইটটি আপনার মালিকানায় থাকবে।
  • ওয়েবসাইটটির সুরক্ষা, ব্যাকআপ এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা আপনার উপর নির্ভর করবে। 
  • আপনি কয়েক মিলিয়ন ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন অ্যাক্সেস করতে পারবেন, যা আপনার ব্লগকে একটি অন্যরকম লুক দিবে।

ব্লগার ফ্রি ব্লগ বানানোর নিয়ম

blogger.com সাইটের মাধ্যমে ব্লগ বানালে আপনার এক টাকাও খরচ হবে না। ব্লগার ফ্রি ব্লগ বানানোর জন্য আপনাকে একটি জিমেইল বা গুগল অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হবে।

তবে যদি আপনার ব্লগ সাইটকে ব্র্যান্ড বানাতে চান, তাহলে একটি কাস্টম ডোমেইন কিনতে পারেন।

কাস্টম ডোমেইন বলতে সেই ডোমেইনগুলোকে বোঝানো হয় যা আপনাকে কিনে নিতে হয়। ডোমেইন নিয়ে আমি পূর্বে আলোচনা করেছি। আপনি যদি গুগল ব্লগারে ব্লগ সাইট বানাতে চান, তাহলে Blogger এ যেতে হবে।

Blogger.com সাইটে যাওয়ার পর দেখবেন প্রথম পেজেই রয়েছে “Create A Blog” নামের একটি অপশন। এতে ক্লিক করার পর আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন করুন।

লগ ইন করার পর আপনার ব্লগার ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন। এখন আপনি “Create a Blog” লিংকে ক্লিক করে ব্লগ লিখতে পারবেন।

বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করার মাধ্যম

একটি ব্লগ সাইট থেকে আয় করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। কিন্তু এখানে আমি সবচেয়ে সহজ এবং ভালো কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আপনাদের বলবো।

ব্লগ থেকে টাকা আয় করার জন্য আমার কাছে তিনটি উপায় সহজ এবং ভালো লেগেছে।

উপায়গুলো হলো:

  1. গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে

  2. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে

  3. প্রোডাক্ট প্রমোট করে

চলুন তাহলে এই তিনটি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয়ঃ

২০০৩ সালের জুন মাসের ১৮ তারিখে  টেক জায়ান্ট গুগল তাদের একটি এডভার্টাইসিং প্রোগ্রাম কার্যক্রম শুরু করে যা গুগল এডসেন্স নামে পরিচিত।

প্রথমদিকে শুধু মাত্র কয়েকটি ভাষা সাপোর্ট করলেও এখন অনেক গুলো ভাষার পাশাপাশি আমাদের বাংলা ভাষাও গুগল অ্যাডসেন্স সাপোর্ট করছে।

অনলাইন থেকে আয় করার আরো উপায়..

যার কারনে বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করা আমাদের জন্য অনেকটা সহজ হয়ে উঠেছে। আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট থাকে এবং সেই ওয়েবসাইট টি গুগল অ্যাডসেন্স এর নীতিমালা মেনে তৈরি করা হয়।

তবে আপনি আপনার ওয়েবসাইট টি দিয়ে খুব সহজেই অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

বর্তমানে কোনো ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউবে টাকা আয় করার জন্য সবাই গুগল অ্যাডসেন্সকেই নির্বাচন করে। কারন এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাবহারেও সহজ। 

অনেক সময় আমরা কোনো ওয়েবসাইটে দেখতে পাই যে কোনো একজায়গায় একটি এড এসে রয়েছে আর পাশেই লেখা থাকে ads by google. এটিই মুলত গুগল অ্যাডসেন্সের এড। অ্যাডসেন্সের মাধমে সাইটে এড দেয়া হয়।

অর্থাৎ সাইটের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় কোনো ছবি, ভিডিও ইত্যাদি দেয়া হয়। আপনি যখন এটি একটিভ করবেন তখন গুগল আপনার ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে।

যখন কেউ সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তখন আপনার ব্যালেন্সে ডলার জমা হওয়া শুরু হবে। 

গুগল সাধারনত CPC অর্থাৎ Cost Per Click এর মাধ্যমে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট থেকে কেমন আয় হবে তা নির্ধারণ করে দিবে। ।

সিপিসি পদ্ধতি এর মানে হল আপনি যখন আপনার কোন ওয়েবপেজে গুগল অ্যাডসেন্স এর অ্যাড রাখবেন এবং আপনার ভিসিটর সেই অ্যাড এর উপর যখন ক্লিক করবে তখন একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ গুগল আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে যোগ করে দিবে।

আপনার সাইটে যত বেশি ভিজিটর আসবে আপনার ব্যালেন্সও তত দ্রুত বারতে থাকবে। আপনার ব্যালেন্স যখন ১০০ ডলার হবে তখন আপনি সেই টাকাগুলো উইথড্রও করতে পারবেন। 

সেজন্য আপনাকে আগে দেখতে হবে যে আপনার সাইটের ট্রাফিক কেমন। যত বেশি ভিজিটর তত বেশি ডলার। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ঃ

গুগল অ্যাডসেন্সের পরে সবচেয়ে ভালো একটি উপায় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়। এর মানে হচ্ছে যে, আপনি অন্যের বিজনেস বা প্রোডাক্ট কে প্রমোট করে দিবেন এবং সেখান থেকে আপনি কিছু টাকা কমিশন হিসেবে পাবেন।

ইন্টারনেটে এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং সাপোর্ট করে। অর্থাৎ আপনি তাদের প্রডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে আপনার ব্লগে লিখবেন বা প্রচার করবেন। সেখান থেকে যদি কেউ ওই প্রোডাক্ট কিনে তবে আপনি সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।

এটিই মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং।

অনলাইনের অনেক জনপ্রিয় স্টোর আছে যেমন, অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট এবং এছাড়া আরো অনেক অনেক কোম্পানি আছে তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট আপনার ব্লগে পোস্ট করতে হবে।

এই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর এড গুলো বিভিন্ন এফিলিয়েট লিংক দ্বারা ব্লগে পোস্ট করা হয়। আপনি যদি ওই অনলাইন স্টোরগুলোতে অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট খুলেন তবে আপনাকেও একটি এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হবে।

এরপর আপনার দেয়া এফিলিয়েট লিংক থেকে যদি কেউ কিছু ক্রয় করে তাহলে সেই প্রত্যেকটি পণ্যের উপর আপনি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন। এভাবে আপনি আপনার ব্লগে বিভিন্ন এফিলিয়েট লিংক পাবলিশ করে অনেক কমিশন পেতে পারেন।

লোকাল প্রডাক্ট প্রমোট করে আয়ঃ

গুগল অ্যাডসেন্স অথবা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর পরে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো লোকাল প্রডাক্ট প্রমোট করে আয় করা। কিন্তু এই পদ্ধতিতে আয় করতে হলে সাইটে অনেক ভিজিটর থাকতে হবে। 

যেই দোকানের প্রোডাক্ট আপনি প্রমোট করবেন সেই দোকানের মালিকের সাথে আপনার আগে কথা বলে নিতে হবে। আপনার সাইটের ট্রাফিক যদি বেশি হয় তাহলে তারা আপনাকে পার্মিশন দিতে আপত্তি করবে না। 

বাংলা ব্লগ থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

আপনি যদি আপনার ব্লগে সঠিকভাবে শ্রম দেন তাহলে আপনি খুব ভালো পরিমানে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন ব্লগারদের নিয়ে করা অনলাইন সার্ভে এর মাধ্যমে জানা যায়।

যে ২০% ব্লগাররা এত পরিমানে আয় করছে যে তারা নিজের ফ্যামিলি এবং নিজের লাইফস্টাইল খুব সুন্দর করে চালিয়ে নিতে পারছেন।

এমনকি তারা যেকোনো হাই প্রোফাইল জবের থেকেও বেশি টাকা ইনকাম করছেন শুধুমাত্র নিজের ব্লগ থেকে। আরও ৬০% ব্লগার রয়েছে যারা ব্লগ থেকে মাসে ১০০ ডলারও কামাতে পারছে না।

কারন তারা তাদের ব্লগে সময় দেয় না এবং কোনো ব্লগই মানসম্মত হয়নি। যার কারনে তাদের ভিজিটরও কমে গিয়েছিলো। 

মার্কেটিং নিয়ে আরো পড়েন..

এবং শেষ ২০% এমন ব্লগার রয়েছে যারা কিছু না করেই দিনে শুধু ২-৩ ঘন্টা সময় দিয়েই মাসে ২০০ ডলার কামিয়ে নিচ্ছে। অর্থাৎ বাংলা টাকায় ১৭০০০ টাকার মতো। 

অর্থাৎ আপনি আপনার ব্লগে যত বেশি শ্রম দিবেন আপনার আয়ও তত বেশি হবে। আপনি যত বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর আনতে পারবেন আপনার আয়ের সম্ভাবনাও তত বেড়ে যাবে।

বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করতে কতদিন সময় লাগে?

আপনার বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় কবে থেকে শুরু হবে আর কত আয় হবে সেটা নির্ভর করে একান্তই আপনার উপর। যদি নিয়মিত সঠিক পথ মেনে ব্লগিং করেন এবং ঠিকমতো শ্রম দেন তাহলে ৪-৫ মাসের ভেতর একটু হলেও টাকার গন্ধ পেতে পারেন।

অর্থাৎ এখনো টাকা হাতে নাও পেতে পারেন। টাকার গন্ধ মানে টাকা নয়, এটা মাথায় রাখতে হবে।

এই গন্ধকে ভালবেসে যদি কাজে আরও বেশি মনযোগী হন তাহলে ৮-৯ মাসের ভেতরেই টাকা দেখতে পাবেন। অর্থাৎ টাকা আপনার হাতে আসতে পারে। ব্লগিং হলো আসলে ভালবাসার বিষয়। একটু গাফিলতি করলেই আর টাকার দেখা পাবেন না।

মানে টাকাটা মাটি হয়ে যাবে। ডোমেইন হোস্টিং সব জলে যাবে। তাই ব্লগিং করলে মন থেকে করবেন এবং টাকার পিছনে দৌরাবেন না। তাহলেই একদিন সফল হবেন। 

আমাদের পরামর্শঃ

আমরা এখানে খুব সহজ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা সম্ভব, একটি ওয়েবসাইট কি করে ওপেন করতে হয়, অ্যাডসেন্স কি করে কাজ করে ইত্যাদি। তাই আশা করি ব্লগটি পরে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

এবং পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই, আপনারা টাকার পিছনে দৌড়াবেন না তাহলেই একদিন আপনারা সফল হবেন।

আমাদের বাংলা আইটি ব্লগে নিয়মিত অনলাইনে আয় করার উপায় সহ বিভিন্ন এসইও এবং ব্লগিং নিয়ে অনেক আর্টিকেল রয়েছে যা আপনার অনলাইন আয় নিয়ে অনেক ধারণা দিবেন।

0 thoughts on “ব্লগ মানে কি ? বাংলা ব্লগসাইট থেকে আয় করার উপায় ”

  1. নাইমুল ইসলাম

    ভাই আমি সপ্তাহে নিমিষেই ৫৫ ডলার নিয়ে নিতে পারি। বাংলা ব্লগ।

  2. আপনার লেখা পরে খুব ভাল লাগল । আমিও বাংলা ব্লগিং করব ধন্যবাদ

    1. জ্বি আপনি শুরু করে দিতে পারেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত প্রদান করার জন্য।

  3. মিসবা হক

    মোবাইল দিয়ে কি ব্লগ থেকে আসলেই ইনকাম করা যাবে ?

  4. Tufayel ahmed chowdury

    ভাই আমি বাংলা ব্লগিং করতে চাই, আমাকে কি একটি একাউন্ট কুলে দিতে পারবেন।

      1. একটি ব্লগ সাইট এ ১ মাস এ কত গোলা আর্টিকেল লিখতে হবে এবং কয়দিন পর পর আর্টিকেল দিতে হবে। এভাবে কত গোলা আর্টিকেল লিখতে পারলে Google Adsense এর থেকে ads এর approval পাওয়া যাবে।

        1. প্রতিদিন একটি করে দিতে পারেন তবে বেশি দিলে ক্ষতি নাই। ৩০-৪০ টি আর্টিকেল হলে ads এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তব্র আপনাকে বড় বড় আর্টিকেল লিখতে হবে । চেষ্টা করবেন ৭০০-১০০০ শব্দের আর্টিকেল লিখার।

  5. আপনার প্রতিটি পোস্ট সুন্দর এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি । ধন্যবাদ অসাধারণ পোস্টের জন্য

  6. আচ্ছা আপনাদের ওয়েবসাইটের মত কিভাবে আমার ওয়েবসাইট ডিজাইন করব? কোন টিউটোরিয়াল ভিডিও থাকলে দিতে পারেন অথবা এরকম কিভাবে করব কোন পোস্ট থাকলে লিংক দিয়ে সাহায্য করুন।

    1. কোন টিউটোরিয়াল বা পোষ্ট নেই কাষ্টম ডিজাইন করা হয়েছে আলাদা সিএসএস দিয়ে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top