ই পাসপোর্ট করার নিয়ম : যদিও বা ই পাসপোর্ট নিয়ে আমি আমার গত আর্টিকেল গুলো তে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।
এবং সেই আর্টিকেল গুলো তে আমি আপনাকে স্পষ্ট ভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি যে। ই পাসপোর্ট কি এবং ই পাসপোর্ট এর সুবিধা গুলো কি কি।
তবে এই বিষয় গুলো জানার পরে উক্ত আর্টিকেল গুলো তে অনেকেই ই পাসপোর্ট সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। যেমন, ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কিভাবে করতে হয়।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো কি কি। এবং ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ হতে পারে। আর এইসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য মূলত আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।
কেননা আজকের এই আর্টিকেলে আমি এই ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং কত টাকা খরচ হবে তার বিস্তারিত বিষয় নিয়ে বিশদ ভাবে আলোচনা করব।
বর্তমান সময় আমাদের বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট সেবা চালু করা হয়েছে। যেখানে আগেকার দিনে যেমন পাসপোর্ট এর মধ্যে একটি বই থাকতো।
এবং সেই বইয়ের মধ্যে সেই পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য গুলো উল্লেখ করা থাকতো। তবে আপনি যদি ই পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।
সেক্ষেত্রে ওই আগের মত আপনার এক টি বই থাকবে। তবে সেই বইয়ের মধ্যে দুইটি পাতা কম থাকবে। এবং সেই দুটি পাতার পরিবর্তে উক্ত বইয়ের মধ্যে একটি চিপ যুক্ত কার্ড থাকবে।
যেখানে একজন পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তির বিভিন্ন তথ্য গুলো জমা হয়ে থাকবে। আর যেসব চিপ যুক্ত কার্ড এর মধ্যে একজন ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য গুলো জমা হয়ে থাকে।
তাকে বলা হয়ে থাকে, ই পাসপোর্ট। তো আমাদের মধ্যে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন। যারা মূলত এই ই পাসপোর্ট সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে না।
আর সে কারণেই অনেকেই জানতে চায় যে, ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কিভাবে করতে হয়। এবং ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ কত টাকা হয়।
আপনার জন্য আরোও লেখা…
- ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- সরকারি চাকরিজীবিদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
- ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট কারা পাবেন এবং কারা পাবেন না?
আর এই বিষয় গুলো সম্পর্কে আপনি যেন সঠিক ভাবে জানতে পারেন। এর পাশাপাশি আপনি যেন নিজে থেকেই এই ধরনের ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে পারেন।
সেজন্য ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার প্রতিটা ধাপ কে। আমি আজকে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করব আলোচনা করব। আর সেজন্য আপনাকে আজকের পুরো লেখা টি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
তাহলে আর দেরি না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক।
ই পাসপোর্ট কি? What is e passport?
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার উপায় গুলো নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।
তবে তার আগে এই ই পাসপোর্ট কাকে বলে সে সম্পর্কে আপনাকে একটু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। আর যখন আপনি এই বিষয় টি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
তখন আপনার পরবর্তী আলোচনা গুলো বুঝতে সুবিধা হবে। তাই চলুন সবার শুরুতে জেনে নেওয়া যাক যে, ই পাসপোর্ট কি (What is e passport?).
তো আপনি যদি আগেকার দিনের পাসপোর্ট এর সাথে বর্তমান সময়ের ই পাসপোর্ট এর তুলনা করেন।
তাহলে দেখতে পারবেন যে, ই পাসপোর্ট এর মধ্যেও একটি বই প্রদান করা হয়। এবং সেই বইয়ের মধ্যে উক্ত পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তির সমস্ত ডিটেলস উল্লেখ করা থাকে।
তবে সাধারণ পাসপোর্ট এর থেকে ই পাসপোর্ট এর পার্থক্য হল। এই ধরনের ডিজিটাল পাসপোর্ট এর মধ্যে এক ধরনের উন্নত মানের কার্ড যুক্ত চিপ ব্যবহার করা হয়। যেখানে সেই পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য গুলো সংরক্ষণ করা থাকে।
এর পাশাপাশি এই ধরনের ডিজিটাল পদ্ধতির ই পাসপোর্ট এর মধ্যে আরো বেশ কিছু অতিরিক্ত তথ্যাবলী সংযুক্ত থাকে। যেমন, আপনি যদি এখন ই পাসপোর্ট করতে চান।
তাহলে কিন্তু আপনার ১০ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি আপনার দুটি চোখের আইরিশ নেওয়া হবে।
যার ফলে এই ই পাসপোর্ট এর কারনে খুব সহজেই একজন ব্যক্তি কে শনাক্ত করা যাবে। আর ডিজিটাল চিপ যুক্ত এই পাসপোর্ট কে বলা হয়ে থাকে, ই পাসপোর্ট।
ই পাসপোর্ট এর কাজ কি বা ই পাসপোর্ট দিয়ে কি করা যাবে?
উপরের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা থেকে আপনি জানতে পারলেন যে, ই পাসপোর্ট কি। তবে এই বিষয় টি জানার পরে এখন হয়তো বা আপনার মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে।
আর সেই প্রশ্ন টি হল যে, এই ধরনের ডিজিটাল চিপ যুক্ত ই পাসপোর্ট এর কাজ কি। তো যদি আপনার মনে এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে।
তাহলে আমি আপনাকে বলব যে, এই ধরনের ই পাসপোর্ট মূলত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা একটু লক্ষ্য করলেই আপনি ই পাসপোর্ট এর বিভিন্ন প্রকারের সুবিধা দেখতে পারবেন।
চলুন এবার তাহলে সে সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।
দেখুন, আপনি যদি এমনিতে সাধারণ পাসপোর্ট এর মাধ্যমে ভিসা করেন। এবং অন্য কোন দেশে যাতায়াত করেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিসা চেকিং সেন্টারে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে। কেননা সেখানে আপনাকে ম্যানুয়ালি চেক করতে হবে।
অপরদিকে আপনি যদি ই পাসপোর্ট করেন। তাহলে আপনি ই গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুততার সাথে যাতায়াত করতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে আর লাইনে দাঁড়িয়ে ভিসা চেক করতে হবে না। কেননা যখন আপনি ই গেটের সামনে দাঁড়াবেন।
তখন ক্যামেরা দিয়ে আপনার ছবি তোলা হবে। এর পাশাপাশি আপনি সেই ই গেটের মধ্যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আপনার ভিসা যাচাই করতে পারবেন। এর ফলে আপনার মূল্যবান সময় বেঁচে যাবে।
তবে যদি আপনার ই পাসপোর্ট করা থাকে। এবং আপনার ভিসার মধ্যে যদি কোন প্রকার গরমিল থাকে।
তাহলে কিন্তু আপনি খুব সহজেই সেই ভিসা ই গেট এর মধ্যে ধরা পড়ে যাবেন। এর পাশাপাশি আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ থাকবেন।
যাদের ভিসার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে। তো কোন প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে যদি আপনার ভিসার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়ে থাকে।
তাহলে আপনি খুব দ্রুততার সাথে সেই ভিসা ই গেটের মধ্যে ধরা পড়ে যাবেন। মূলত এইসব কারণেই বর্তমান সময়ে ই পাসপোর্ট করা হয়ে থাকে।
যার ফলে উক্ত পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তি সম্পর্কে খুব দ্রুততার সাথে যাবতীয় তথ্য গুলো জেনে নেওয়া যায়।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
উপরের আলোচনা থেকে আপনি জানতে পারলেন যে, ই পাসপোর্ট কি। এবং ই পাসপোর্ট এর কাজ কি।
তবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টি জানার পাশাপাশি আপনাকে আরো একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। আর সেই বিষয় টি হল যে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
অর্থাৎ আপনি যদি একজন নতুন ব্যক্তি হিসেবে ই পাসপোর্ট করতে চান। তাহলে আপনার কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে।
চলুন এবার তাহলে সেই বিষয় টি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনার নাগরিক সনদ / চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে।
- যদি আপনি কোন পেশার সাথে নিযুক্ত থাকেন। যেমন, ডক্টর, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী ইত্যাদি। তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার পেশার সনদ অথবা চাকরির আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে।
- যদি আপনার নিজস্ব জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনার পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি প্রদান করতে হবে।
- আপনি যদি আগে থেকেই পাসপোর্ট করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে উক্ত পাসপোর্ট টি প্রদান করতে হবে।
- বর্তমান সময়ে আপনি যেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। সেই ঠিকানা এর প্রমাণপত্র কিংবা ইউটিলিটি বিলের কপি প্রয়োজন হবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা ইংরেজি ভার্সনে জন্ম নিবন্ধন সনদ এর প্রয়োজন হবে।
- আপনি যে অনলাইন এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেছেন। সেই অনলাইনে আবেদনের কপি প্রদান করতে হবে।
- অনলাইনে আবেদনের Application Summary.
তো আপনি যদি ই পাসপোর্ট করতে চান। তাহলে আপনার যে সকল ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। সেই ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আর যখন আপনি এই উল্লেখিত ডকুমেন্ট গুলো সঠিক ভাবে প্রদান করতে পারবেন। তখন আপনি খুব সহজেই এই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ
তো এখন অনেকের মনে একটু প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে। এই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ কিভাবে প্রদান করবেন।
যদিও বা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো নিয়ে আমি নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।
তবে যারা জানতে চান যে, ই পাসপোর্ট করার সময় কিভাবে ফি প্রদান করতে হয়। তাদের জন্য এবার আমি স্পষ্ট ভাবে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
অনলাইনে আবেদন করার পর যখন আপনি ফরম ডাউনলোড করবেন তার সাথে ফ্রম সামারি ডাউনলোড করে নেবেন।
তারপর সেই ফরমটি নিয়ে আপনি সোনালী ব্যাংক অথবা কৃষি ব্যাংকে যোগাযোগ করবেন। তারা আপনার পাসপোর্ট ফি প্রদান করে আপনাকে একটি রশিদ প্রদান করবে।
ই পাসপোর্ট ফি কত?
আগেকার দিনের পাসপোর্ট যেমন বিভিন্ন বছর মেয়াদী ছিল। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি ই পাসপোর্ট এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকার মেয়াদ এবং দুই ধরনের পাতার পাসপোর্ট দেখতে পারবেন।
তো এই মেয়াদ এবং পাতার উপরে ভিত্তি করে ই পাসপোর্ট এর ফি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যেমন, ই পাসপোর্ট এর জন্য মূলত ৬,৩২৫ টাকা, ৮,৩২৫ টাকা ১২,০৭৫ টাকা প্রদান করার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
তবে এই ই পাসপোর্ট ফি গুলো মূলত জরুরী, অতি জরুরী এবং নিয়মিত এর ধরন অনুসারে নেওয়া হয়ে থাকে। অপর দিকে আপনি যদি ৪৮ পাতার ই পাসপোর্ট করতে চান।
সেক্ষেত্রে আপনাকে ৫,৭৫০ টাকা, ৮,০৫০ টাকা এবং ১০,৩৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। এবং এই ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রেও আপনি নিয়মিত, জরুরী এবং অতি জরুরী সেবা ভোগ করতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
যেহেতু প্রতিটা কাজ নির্দিষ্ট কোন নিয়ম মেনে সম্পন্ন করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি যখন ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করবেন।
তখন অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। আর আপনি যদি ই পাসপোর্ট করতে চান। তাহলে এই নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়াটা আপনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
তাই চলুন এবার তাহলে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক। যাতে করে আপনার ই পাসপোর্ট সম্পর্কিত কোন কিছু অজানা না থাকে।
- প্রথমত আপনাকে অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
- অনলাইনে আবেদন করার সময় আপনার কোন প্রকার ডকুমেন্ট সত্যায়িত করার প্রয়োজন হবে না।
- আপনার নিজস্ব জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
- যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার পিতা অথবা মাতা জাতীয় পরিচয় পত্র উল্লেখ করতে পারবেন।
- আপনার বর্তমান ঠিকানার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদন দাখিল করতে হবে।
- যদি আপনার বয়স ১৮ বছর এর কম অথবা ৬৫ বছরের বেশি হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র পাঁচ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- আপনি যদি কোন পেশার সাথে সংযুক্ত থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই পেশার সনদ প্রদান করতে হবে।
- আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে বৈবাহিক কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।
- অতি জরুরী ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর সনদ প্রদান করতে হবে।
- আবেদন করার সময় অবশ্যই আপনাকে মূল জাতীয় পরিচয় পত্র, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন, টেকনিক্যাল সনদ এবং সরকারি আদেশ দাখিল করতে হবে।
- যখন আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করবেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে মূল পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।
তো আমাদের মধ্যে যারা আসলে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের জন্য উপরে সব ধরনের নিয়ম গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
এবং আমি যথাযথ ভাবে সেই ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম গুলো কে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি।
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম
এবার আমি আপনাকে e passport অনলাইন আবেদন করার নিয়ম গুলো জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব। মূলত আপনি খুব সহজেই ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে পারবেন।
তবে সেজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
তারপরে আপনি Apply Online নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে সেই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
যখন আপনি উপরোক্ত অপশনের মধ্যে ক্লিক করবেন। তখন আপনাকে আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন করতে হবে। এরপরে আপনার বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন, ইমেইল ভেরিফিকেশন, পূর্ববর্তী পাসপোর্ট থাকলে তার তথ্য প্রদান করা।
ঠিকানা, পিতা অথবা মাতার তথ্য এবং যোগাযোগ করার ঠিকানা প্রদান করতে হবে। সবশেষে আপনাকে উক্ত আবেদন এর ফরম টি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে হবে।
আর এই কাজ গুলো করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। চলুন এবার তাহলে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার সেই ধাপ গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ধাপ ১: আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন
তো যখন আপনি বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। তখন আপনাকে আপনার জেলা এবং থানার নাম সিলেক্ট করতে হবে।
আর এই কাজ টি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত ইমেইল এড্রেস টি প্রদান করতে হবে। আর এই কাজ গুলো করার পরে আপনাকে কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ২: ইমেইল ভেরিফিকেশন
যখন উপরোক্ত ধাপে আপনি আপনার ব্যক্তিগত ইমেইল এড্রেস টি প্রদান করবেন। তখন আপনাকে সেই ইমেল এড্রেস টি ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে।
মূলত এই ধাপে আপনার ইমেইল এড্রেস এর মধ্যে একটি লিঙ্ক পাঠানো হবে। আর যখন আপনি সেই লিংক এর মধ্যে ক্লিক করবেন। তখন আপনার ইমেইল এড্রেস ভেরিফাই হয়ে যাবে।
ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
সবশেষে আপনাকে আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। যেমন, আপনার নাম, আপনি বর্তমানে কোন পেশার সাথে যুক্ত আছেন।
আপনার জন্ম তারিখ, থানা, জেলা, আপনার লিঙ্গ কি ইত্যাদি বিষয় গুলো সঠিক ভাবে প্রদান করতে হবে। এবং আপনাকে এই যাবতীয় তথ্য গুলো দিয়ে সেভ করে কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কোনটি প্রয়োজন?
তো যখন আপনি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করবেন। তখন আপনার মনে একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খাবে।
আর সেই প্রশ্ন টি হল যে, এই কাজের জন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে। নাকি আপনার জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হবে।
আর আপনার মনে যদি এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে। তাহলে আমি এবার এই বিষয়টি কে সহজ ভাবে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করব।
যাতে করে আপনি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর টি সম্পর্কে জানতে পারেন। যদি আপনার বয়স ১৮ বছর এর কম হয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনার নিজস্ব কোন জাতীয় পরিচয় পত্র থাকবে না।
সে জন্য আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন এর মধ্যে থাকা যাবতীয় তথ্য গুলো। ই পাসপোর্ট এর আবেদন করার সময় প্রদান করতে পারবেন।
অপরদিকে যদি আপনার বয়স ১৮ বছর এর বেশি হয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত জাতীয় পরিচয় পত্র থাকবে।
তখন আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর মধ্যে থাকা তথ্য গুলো প্রদান করতে পারবেন। অথবা আপনি চাইলে জাতীয় পরিচয় পত্রের পরিবর্তে জন্ম নিবন্ধন প্রদান করতে পারবেন।
পাসপোর্ট নিয়ে আরোও দেখুন…
- এমআরপি পাসপোর্ট থেকে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
- পাসপোর্ট রিনিউ করার পর পুরাতন পাসপোর্ট কি করবেন?
- ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
ই পাসপোর্ট ফি প্রদান ও আবেদন প্রিন্ট
যখন আপনি এই ই পাসপোর্ট এর অনলাইন আবেদন সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন। তখন আপনার আবেদনের কাজ শেষ হওয়ার পরে আপনি আরও দুটি পৃষ্ঠা দেখতে পারবেন।
আর সেই পৃষ্ঠা দুটি হল, Application Summary & Online Registration Form. তো এগুলো আপনাকে পিডিএফ ফাইল এর মধ্যে কম্পিউটারে ডাউনলোড করে নিতে হবে।
আর ই পাসপোর্ট করার জন্য যে ফি প্রদান করা হয়। সেটি আপনি নিজের ঘরে বসেই পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন।
কেননা বর্তমান সময়ে আপনি চাইলে আপনার বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমেও এই ফি প্রদান করতে পারবেন। যা নিয়ে আমি নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।
ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
আর্টিকেলের সবশেষে আমি আপনাকে দেখাবো যে ই পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেয়ার নিয়ম গুলো কি কি।
অর্থাৎ আপনি যখন পাসপোর্ট আবেদন করবেন। তখন আপনাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। কিন্তু এই ফি আসলে কিভাবে প্রদান করতে হয়। সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না।
আর সে কারণে এবার আমি আপনাকে ই পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
চলুন এবার তাহলে সেই বিষয় টি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
- প্রথমত আপনাকে অনলাইনে চালান করার জন্য Automated Challan System Bangladesh এই ওয়েবসাইটের মধ্যে ভিজিট করতে হবে।
- তো এরপরে আপনি ই পাসপোর্ট ফি নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে সেখানে ক্লিক করতে হবে।
- এরপরে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠার সংখ্যা নির্বাচন করতে হবে। এর পাশাপাশি আপনার সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং ডেলিভারি হওয়ার ধরন নির্বাচন করতে হবে।
- উপরোক্ত কাজ গুলো করার পরে আপনি যে ব্যক্তির পাসপোর্ট এর জন্য ফি পরিশোধ করতে চান। তার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর অথবা জন্ম নিবন্ধন এর নম্বর প্রদান করতে হবে।
- তারপরে আপনি যে ব্যক্তির ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে চান। তার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।
- উপরোক্ত তথ্য গুলো দেওয়ার পরে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে যে, আপনি আসলে কোন মাধ্যমে টাকা দিতে চান।
তো আমি ধরে নিলাম যে, আপনি বিকাশের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর ফি প্রদান করতে চাচ্ছেন। তো সেজন্য আপনাকে বিকাশের অপশনে ক্লিক করতে হবে।
যখন আপনি বিকাশের অপশনে ক্লিক করবেন। তখন আপনাকে আরো বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। যেমন: আপনাকে পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে Mobile Banking নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপরে আপনার যে নম্বর থেকে বিকাশে টাকা পাঠাতে চাইছেন, সেটি প্রদান করতে হবে। এবং সবশেষে আপনাকে আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন দিয়ে পেমেন্ট কমপ্লিট করতে হবে।
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন নিয়ে কিছু কথা
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান। তবে আজকের এই আলোচনা টি আপনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কারণ আমি আজকের আর্টিকেলে আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে। কিভাবে আপনি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করবেন।
এর পাশাপাশি ই পাসপোর্ট এর ফি কত টাকা। সে সম্পর্কে যথাযথ আলোচনা করেছি।
এছাড়াও সবশেষে আপনাকে দেখিয়ে দিয়েছি যে, কিভাবে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করবেন।
আশা করি আলোচিত এই আলোচনা গুলো থেকে আপনি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার যাবতীয় বিষয় গুলো সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
আর এই ধরনের অজানা বিষয় গুলো কে খুব সহজ ভাষায় জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সাথে থাকবেন। পুরো আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি আরোও জানতে পারেন…