পনারা যারা আমেরিকায় অবস্থান করে আছেন। এবং ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।
কারণ আজকে আমি আপনাকে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করার সকল নিয়ম গুলো ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিব।
আর আপনি যদি আজকের দেখানো নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট করে নিতে পারবেন।
তো আর দেরি না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক (Rules for renewing e-passport from America).
কিভাবে আমেরিকা থেকে পাসপোর্ট রিনিউ করা যায়?
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা আসলে জানতে চায় যে, কিভাবে আমেরিকা থেকে পাসপোর্ট রিনিউ করা যাবে।
আর আপনি যদি এই বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে শুনুন, আপনি বিভিন্ন উপায়ে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
যেমন, আপনি যদি বাংলাদেশ এম্বাসি, ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক লস অ্যান্জেলেস কনস্যুলেট অফিস এর মধ্যে যোগাযোগ করেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারবেন।
তবে তার আগে আপনাকে সঠিক ভাবে আবেদন করতে হবে। আর এই আবেদন করার জন্য আপনাকে কি কি নিয়ম ফলো করতে হবে। এবার আমি আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ সে গুলো দেখিয়ে দিব।
আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
তো সবার শুরুতেই আমি আপনাকে আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম গুলো শর্টকাট ভাবে বলবো। যাতে করে আপনি খুব সহজেই আমেরিকা থেকেই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বুঝতে পারেন।
আর সেই নিয়ম গুলো হল:
- সবার প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট এর মূল ওয়েবসাইট থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
- এরপর আপনাকে উক্ত ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
- এবং সেই ফরম এর মধ্যে আপনার যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।
- এখানে আপনি আপনার সকল তথ্য গুলো নির্ভুল ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- এবং যখন আপনার তথ্য দেওয়া সম্পূর্ণ হবে। তখন আপনাকে উক্ত ফর্ম টি জমা দিতে হবে।
- এর পাশাপাশি আপনাকে অনলাইন ফরম টি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
- তার পরবর্তী ধাপে আপনাকে পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি প্রদান করতে হবে।
- সবশেষে আপনি আপনার ই পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট করতে পারবেন।
মূলত আপনি যদি আমেরিকায় থাকেন, তাহলে কোন নিয়ম গুলো অনুসরণ করে বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
সেই নিয়ম গুলো কে শর্টকাট ভাবে উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। চলুন, এবার সে গুলো সম্পর্কে একটু বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ধাপ 1: বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
দেখুন. আপনি যদি বাংলাদেশী ই পাসপোর্ট আমেরিকা থেকে রিনিউ করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
আর যখন আপনি এই ওয়েবসাইট থেকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে চাইবেন। তখন আপনাকে আরো বেশ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে। যেমনঃ
- অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
- এবার আপনি সবার উপরের দিকে “Apply Online Menu” নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন আপনি সেখানে ক্লিক করুন।
- উপরোক্ত অপশন এর মধ্যে ক্লিক করার পরে আপনি সবার শুরুতে “Are you applying from Bangladesh” নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন।
- এখানে আপনি “No” তে টিক মার্ক দিবেন।
- এবার আপনাকে “Country” সিলেক্ট করতে হবে।
- তো আপনি আপনার দেশ হিসেবে অবশ্যই “United States of America” সিলেক্ট করে দিবেন।
- সবশেষে আপনি কোন বাংলাদেশ এর মিশনে অবস্থান করে আছেন। সেটা সিলেক্ট করে দিয়ে, কনফার্ম বাটন এর মধ্যে ক্লিক করবেন।
তো যখন আপনি উপরের এই কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারবেন। তার পরবর্তী সময়ে আপনাকে নিচের পিকচারের মতো আরও একটি নতুন পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।
এবং উক্ত পেজে আপনাকে আরো বেশ কিছু তথ্য দিতে হবে। এবং উক্ত তথ্য গুলো আপনি নিচের নিয়মে প্রদান করুন।
- সবার প্রথমেই আপনি আপনার এমন একটি ইমেইল এড্রেস দিবেন। যেটি আপনি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করেন।
- এরপর আপনি নিচের অপশনে একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পারবেন। আপনাকে সেই ক্যাপচার কোড টি সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে।
এবং যখন আপনি এই ক্যাপচা পূরন করবেন এবং কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করবেন। তখন আপনি আরো একটি নতুন পেজে প্রবেশ করবেন।
এখন আপনাকে পুনরায় নিচের নিয়ম অনুসারে যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে। যেমনঃ
- আপনার নাম গুলো প্রথম অপশনে সঠিক ভাবে প্রদান করবেন।
- যদি আপনার পাসপোর্ট এর বাইরে অন্য কোন নাম থাকে। তাহলে আপনি সেই নাম টি “Optional” এর মধ্যে প্রদান করবেন।
- এরপর আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বর টি দিতে হবে।
- তাই কান্ট্রি কোড হিসাবে অবশ্যই ইউএস কান্ট্রি কোড প্রদান করবেন।
- এবং তারপরে আপনি আপনার আমেরিকান মোবাইল নম্বর টি টাইপ করবেন।
- আর সবশেষে আপনাকে পুনরায় ক্যাপচা কোড পূরণ করতে হবে।
এরপর যখন আপনি “Create Account” এর মধ্যে ক্লিক করবেন। তখন আপনি সফল ভাবে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন।
তো এই অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পরে আপনাকে নিচের নিয়ম গুলো অনুসরণ করে। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
পাসপোর্ট আবেদনে Full Name কেন লিখবেন?
এখানে একটা কথা বলে রাখা উচিত। সেটি হলো, একজন ব্যক্তি চাইলেই তার জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবে।
আর যেহেতু আপনি এই ডকুমেন্ট গুলো দিয়ে ই পাসপোর্ট করবেন। সেহেতু অবশ্যই আপনার যে পুরো নাম রয়েছে সেটি আপনাকে প্রদান করতে হবে।
কারণ, আপনার দেওয়া নামের সাথে যদি আপনার জন্ম সনদ কিংবা জাতীয় পরিচয় পত্রের নামের মিল না থাকে। তাহলে কিন্তু আপনি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
পাসপোর্টে Given Name কি?
আপনার নামের যে প্রথম অক্ষর গুলো রয়েছে। সে গুলো কে ই পাসপোর্ট এর ভাষায় “Given Name” বলা হয়। যে নামের মাধ্যমে কোন একজন ব্যক্তির পরিচিতি পাওয়া যায়।
কিংবা নির্দিষ্ট কোন একটি ব্যক্তি কে চিহ্নিত করা যায়।
তাই পাসপোর্ট করার সময় আপনি অবশ্যই উক্ত অপশন এর মধ্যে আপনার নামের প্রথম অংশটি দেয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন, আপনার নাম যদি হয় মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। তাহলে আপনি উক্ত অপশন এর মধ্যে মোঃ মুস্তাফিজুর দিবেন।
পাসপোর্টে Surname কি?
উক্ত অপশন এর মধ্যে আপনার নামের যে শেষের অংশটুকু রয়েছে সেটি প্রদান করবেন। যেমন, আপনার নাম যদি হয় মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। তাহলে সবার শেষের অংশ হলো রহমান।
আর এটি আপনি উক্ত অপশন এর মধ্যে প্রদান করবেন। তো যদি আপনি নামের দিকে থেকে উপরের নিয়ম গুলো ফলো করেন।
তাহলে আপনি আপনার নাম টি ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন এর মধ্যে সঠিক ভাবে দিতে পারবেন।
Mobile Phone Number in Passport Application
মনে রাখবেন, আপনি ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার সময়। মোবাইল নম্বর দেওয়ার যে অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে অবশ্যই আপনি আমেরিকান মোবাইল নম্বর দিবেন।
কেননা, আপনি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে পাসপোর্ট রিনিউ করছেন। সেজন্য আপনি যদি বাংলাদেশী দেন। তাহলে কিন্তু আপনি রিনিউ করতে পারবেন না।
তাই উক্ত অপশন এর মধ্যে আপনাকে অবশ্যই আমেরিকান মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে।
ধাপ 2: বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন ফর্ম পূরণ করুন
যখন আপনি উপরের নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করার পরে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট ওয়েব সাইট থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন।
তখন আপনাকে পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আর সে জন্য আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যেযন
- বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।
- প্রবেশ করার পরে “Apply for a new passport” নামক অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে উক্ত অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
- এবং আপনার যে পাসপোর্ট রয়েছে সেটি আপনি “Passport type” অপশন এর মধ্যে প্রদান করবেন।
- তারপরে আপনাকে “Save and Continue” বাটন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
মূলত আপনি যদি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করতে চান। তাহলে অনলাইন থেকে কিভাবে সেই আবেদন এর ফরম সংগ্রহ করবেন। সেই পদ্ধতি টি উপরে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আর এখন আপনাকে নিচের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে। উক্ত আবেদনপত্রে যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।
Passport Type (পাসপোর্টের ধরন)
আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট এর সঠিক ধরণ সিলেক্ট করে দিতে হবে। যদি আপনার সাধারণ পাসপোর্ট হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি পাসপোর্ট এর ধরন হিসেবে অফিসিয়াল পাসপোর্ট কিংবা সাধারণ পাসপোর্ট সিলেক্ট করবেন।
কিন্তু আপনি যদি একজন বাংলাদেশী সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন। এবং সরকারি চাকরিজীবী হওয়ার পরে আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন।
তাহলে অবশ্যই আপনাকে সরকারি আদেশ অথবা NOC রয়েছে এমন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হবে।
Personal Information (ব্যক্তিগত তথ্য)
দেখুন, আপনি যখন আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আবেদন করবেন। এবং সেই আবেদন ফরম এর মধ্যে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো দিবেন।
তখন একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, এখানে দেওয়ার তথ্য গুলো তে যেন কোন ধরনের ভুল না থাকে। কেননা এখানে আপনি যদি কোন ধরনের ভুল তথ্য প্রদান করেন।
তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে সংশোধন করার প্রয়োজন পড়বে। এবং এখানে আপনি যে তথ্য গুলো দিবেন। সেই তথ্য গুলো অবশ্যই নিচের নিয়ম অনুসারে দেয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন:
- প্রথমে আপনি যদি নিজের জন্য ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান। তাহলে সবার শুরুর অপশনে আপনাকে “I apply for myself” নামক অপশন এর মধ্যে টিক মার্ক দিতে হবে।
- কিন্তু আপনি যদি অন্য কারো জন্য ই পাসপোর্ট রিনিউ করার আবেদন করেন। তাহলে কোন ভাবেই এই অপশন এর মধ্যে টিক মার্ক প্রদান করবেন না।
- এরপর আপনি আপনার নাম দেয়ার অপশন দেখতে পারবেন। তো এখানে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নাম টি আছে, সেটি দিবেন।
- এরপর আপনি আপনার পেশা উল্লেখ করবেন।
- যদি আপনি কোন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে চাকরির সনদ প্রদান করতে হবে।
- আর আপনি যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ই পাসপোর্ট করেন। তাহলে পাসপোর্ট রিনিউ এর সকল তথ্য গুলো জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী দিবেন।
- কিন্তু আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ই পাসপোর্ট করেন। তাহলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী সকল তথ্য গুলো আবেদনপত্রে জমা দিবেন।
এরপর আপনাকে আপনার সঠিক ঠিকানা প্রদান করতে হবে। আর সবার শুরুতেই আপনি প্রেজেন্ট অ্যাড্রেস নামের অপশন টি দেখতে পারবেন।
অর্থাৎ এখানে আপনার বর্তমান ঠিকানা টি সঠিক ভাবে দিতে হবে। সেজন্য আপনি নিচের নিয়ম গুলো ফলো করুন।
Address (ঠিকানা) সঠিকভাবে প্রদান করুন
এবার আপনাকে আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করতে হবে। তবে এখানে আপনি যে স্থায়ী ঠিকানা দিবেন। সে ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অনুসরণ করবেন।
কেননা আপনি যদি স্থায়ী ভাবে বাংলাদেশে বসবাস করেন। তাহলে আপনার স্থায়ী ঠিকানায় বাংলাদেশ এর তথ্য গুলো প্রদান করবেন।
কিন্তু বর্তমানে আপনি আমেরিকা তে অবস্থান করে আছেন। আর সেজন্য আপনাকে বর্তমান ঠিকানায় আমেরিকার স্থানের যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
এবং তারপরে আপনি বাংলাদেশ এর কোন মিশন থেকে আবেদন করতে চান। তা আপনাকে সঠিক ভাবে নির্ধারণ করে দিতে হবে। এখানে অবশ্যই আপনি আপনার এরিয়ার মধ্যে থাকা বাংলাদেশ মিশনের নাম টি সিলেক্ট করবেন।
ID Documents (পরিচয় সংক্রান্ত ডকুমেন্ট)
আপনি যখন পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু বিষয় দিকে গুরুত্ব রাখতে হবে। আর তার মধ্যে অন্যতম হলো, আপনাকে পুরনো এমআরপি পাসপোর্ট এর যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।
এর পাশাপাশি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন এর মধ্যে থাকা নম্বর গুলো প্রয়োজন হবে। সেই সাথে আপনি কেন আবেদন করছেন, সেই আবেদন করার কারন ষ্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে হবে।
আর বর্তমান সময়ে আপনি আবেদনের বেশ কিছু কারণ দেখাতে পারবেন। যে কারন গুলো নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো।
Reasons to apply for passport (পাসপোর্ট রিনিউ আবেদনের কারণ)
- আপনি আপনার এমআরপি পাসপোর্ট কে ই পাসপোর্টে পরিণত করতে চান।
- আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
- আপনার নিকট যে পাসপোর্ট ছিল, সেটি চুরি হয়ে গেছে কিংবা সেই পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে।
- কোন কারনে আপনার পাসপোর্ট এর মধ্যে থাকা তথ্য গুলো তে ভুল রয়েছে। যা আপনি সংশোধন করতে চান।
- কোন অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আপনার পাসপোর্ট এর ক্ষতি হয়ে গেছে।
- কিংবা আপনি অন্যান্য কারণে পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারবেন।
মূলত একজন ব্যক্তি পাসপোর্ট রিনিউ করার কারণ হিসেবে কি কি কারণ দেখাতে পারবে। সে গুলোর তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
আপনি অবশ্যই আপনার সঠিক কারণটি উল্লেখ করে দিবেন। এবং তার পরবর্তী ধাপে আপনাকে আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন গুলো প্রদান করতে হবে।
Parental Information (পিতা মাতার তথ্য)
যখন আপনি উপরোক্ত কাজ গুলো সঠিক ভাবে করবেন। তার পরবর্তী ধাপে আপনাকে আপনার পিতা এবং আপনার মাতার যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।
আর সে জন্য আপনার পিতা এবং মাতার এন আইডি কার্ড এর মধ্যে যে নাম রয়েছে। সেই নাম গুলো আপনি পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন পত্রের প্রদান করবেন।
এর পাশাপাশি যদি আপনি উক্ত আবেদন পত্রের মধ্যে আপনার পিতা-মাতার পেশা উল্লেখ করতে চান। তাহলে আপনি আপনার পিতা মাতার পেশা নির্বাচন করে দিতে পারবেন।
তবে আপনি যেখানে আপনার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দেয়ার অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে আপনার পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দেয়ার না দিলেও চলবে।
Spouse Information (দাম্পত্যের তথ্য)
এই অপশন এর মধ্যে আপনাকে আপনার দাম্পত্য জীবনের তথ্য গুলো দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি একজন বিবাহিত পুরুষ হয়ে থাকেন।
তাহলে অবশ্যই আপনার স্ত্রীর নাম প্রদান করতে হবে। এবং যখন আপনি আপনার এই অপশন গুলো তে দাম্পত্য জীবনের সঠিক তথ্য গুলো প্রদান করবেন। তারপরে আপনাকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে হবে।
Emergency Contact (জরুরী যোগাযোগ)
যখন আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আবেদন করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে আপনার ব্যবহার করা মোবাইল নম্বর টি প্রদান করতে হবে।
যাতে করে পাসপোর্ট অফিস থেকেই আপনার সাথে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করতে পারে। সেজন্য এখানে আপনি আপনার ব্যক্তিগত নম্বর টি দেয়ার চেষ্টা করবেন।
Passport Option and Delivery Type (পাসপোর্ট এবং ডেলিভারির ধরন)
এর পরবর্তী ধাপে আপনাকে আরো বেশ কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমন, আপনি আসলে কত পৃষ্ঠার পাসপোর্ট রিনিউ করতে চাচ্ছেন তা আপনাকে সিলেক্ট করে দিতে হবে।
যদি আপনার পাসপোর্ট ৪৮ পৃষ্ঠার হয়। তাহলে আপনি অবশ্যই তা সিলেক্ট করবেন।
এবং যদি আপনার পাসপোর্ট ৬৪ পৃষ্ঠা হয়, তাহলে আপনি সেই অপশন টি সিলেক্ট করে দিবেন। এবং যখন আপনি উক্ত অপশন গুলো সঠিক ভাবে পূরণ করবেন।
তখন আপনাকে পুনরায় “Save and Continue” নামক অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ 3: আবেদন যাচাই করুন এবং জমা দিন
আপনি যখন উপরের ধাপ গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করবেন। তখন আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, পাসপোর্ট রিনিউ এর কাজ গুলো একবারে শেষের দিকে চলে এসেছে।
তাই আপনি উক্ত স্থানে যে সকল তথ্য গুলো প্রদান করেছেন। তা অবশ্যই আবার যাচাই করে নিবেন।
কেননা সেই অনলাইন আবেদন এর মধ্যে যদি কোন ধরনের ভুল তথ্য থাকে। তাহলে কিন্তু আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন না।
এবং আপনি যদি দেখেন যে, সেই আবেদন পত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকা যাবতীয় তথ্য গুলো সঠিক রয়েছে। তারপরে আপনাকে “Confirm and proceed to payment” এই অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ 4: আবেদন জমা দিন এবং প্রিন্ট কপি নিন
যখন আপনি উপরের কাজ গুলো করতে পারবেন। তারপরে আপনাকে পেমেন্ট নির্বাচন করতে হবে। এবং পেমেন্ট নির্বাচন করার পর আপনার আবেদন টি জমা দিতে হবে।
তবে এই সময় আপনাকে আরো দুইটি ফাইল ডাউনলোড করার প্রয়োজন পড়বে। আর সেই ফাইল গুলো হলো:
- Online Registration Form,
- Application Summary
আর যখন আপনি উপরের এই দুটি ফাইল ডাউনলোড করবেন। তার পরবর্তীতে আপনাকে সেই ফাইল গুলো প্রিন্ট করে নিতে হবে। এবং এরপর আপনাকে ই পাসপোর্ট পেমেন্ট করতে হবে। সেজন্য নিচের নিয়ম গুলো ফলো করুন।
ধাপ 5: ই-পাসপোর্ট পেমেন্ট এবং এনরোলমেন্ট
ই পাসপোর্ট রিনিউ ফি দেয়ার আগে আপনাকে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট এর জন্য পরিসেবা গ্রহণ করতে হবে। আর যখন আপনি এই পরিষেবার মাধ্যমে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট করবেন।
তখন আপনি আপনার ই পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি প্রদান করতে পারবেন।
এবং আপনি যে অনলাইনে এর মাধ্যমে আবেদন করেছেন। সেই আবেদন টি জমা দিতে পারবেন। আর যখন আপনি এই যাবতীয় তথ্য গুলো জমা দিবেন।
তার পরবর্তীতে আপনি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশি ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
কিভাবে আপনি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করবেন সে বিষয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবে আপনি যখন ই পাসপোর্ট রিনিউ করবেন তখন আপনার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রের দরকার হবে।
আর সে গুলো হলো:
- আপনি যে আবেদন করেছেন সেই আবেদনের সামারি পেজ।
- সেই সাথে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
- ই পাসপোর্ট এর জন্য যে ফি প্রদান করেছেন তার প্রমাণ পত্র দিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
- যদি আপনার পুরাতন পাসপোর্ট থাকে সেটি জমা দিতে হবে।
- আপনি যদি কোন সরকারি চাকরি করে থাকেন। তাহলে আপনার চাকরির সনদ কপি দিতে হবে।
যখন আপনার ই পাসপোর্ট রিনিউ করার প্রয়োজন পড়বে। তখন আপনার কি কি কাগজ পত্রের দরকার হবে। সেই কাগজ পত্র গুলোর তালিকা উপরে প্রদান করা হলো।
আপনি অবশ্যই পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় এই কাগজ পত্র গুলো নিজের সাথে রাখবেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ করার উপায়।
আপনি খুব সহজে বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন। আর সেজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম পাসপোর্ট নবায়ন করতে হবে। এরপর সেই অনলাইন আবেদন কপি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আর যখন আপনি উক্ত কাজ গুলো সঠিক ভাবে সম্পন্ন করবেন। তারপর আপনাকে আপনার পাসপোর্ট রিনিউ এর জন্য বায়োমেট্রিক তালিকা ভুক্তি করার জন্য আ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
সবশেষে যখন আপনি এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহ করবেন। এবং সেগুলো নিয়ে দূতাবাস এর নিকট যাবেন। তখন আপনি আপনার এনরোলমেন্ট এর সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে পারবেন।
Faqs
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে কিভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিবেন?
আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডকুমেন্টস নিয়ে [email protected] এই ঠিকানায় একটি মেইল পাঠিয়ে দিবেন। তাহলে আপনি ওয়াশিংটন ডিসি থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন।
নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ করার উপায়?
আপনারা যারা নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান। তাহলে আপনাকে যাবতীয় কাজ গুলো অনলাইন থেকে করতে হবে। আর যখন আপনি তথ্য দেয়ার পর অনলাইন কপি সংগ্রহ করবেন। তারপর আপনাকে কনস্যুলেট জেনারেল অফিস, নিউ ইয়র্ক এর কাছে যেতে হবে। সেখান থেকে আপনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
নিউইয়র্ক থেকে ই-পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট কিভাবে নিবেন?
আপনি যদি নিউইয়র্ক থেকে ই-পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে চান। তাহলে আপনাকে এখানে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার সামনে একটি ফরম চলে আসবে। যেখানে আপনি আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে নিউইয়র্ক থেকে ই-পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন।
লস এঞ্জেলেস থেকে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট রিনিউ করবো কিভাবে?
যখন আপনি লস এঞ্জেলেস থেকে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে চাইবেন। তখন আপনাকে প্রাথমিক পর্যায়ের সব কাজ অনলাইনে করতে হবে। এরপর অনলাইন আবেদন কপি প্রিন্ট করে।
সেগুলো নিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল অফিস এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তাহলে আপনি লস এঞ্জেলেস থেকে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ই পাসপোর্টের অ্যাপয়েন্টমেন্ট কিভাবে করবো?
দুঃখিত. কারন আমরা এখন পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ই পাসপোর্টের অ্যাপয়েন্টমেন্ট করার কোনো উপায় খুজে পাইনি।
সবশেষে আমাদের কিছুকথা
প্রিয় পাঠক, আপনি কিভাবে আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করবেন। সেই নিয়ম গুলো নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তো আশা করি, আজকের পর থেকে আপনি খুব সহজেই আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন। আর যদি আপনি পাসপোর্ট বা ভিসা সম্পর্কে কোনো কিছু জানতে চান।
তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য।