মাইক্রো নিস ব্লগ কি | কিভাবে মাইক্রো নিস ব্লগ থেকে ইনকাম করবেন?

মাইক্রো নিস ব্লগ কি : ব্লগিং করে প্রচুর পরিমানে টাকা ইনকাম করা যায়। এ নিয়ে তো আপনার কোনো সন্দেহ নেই। তাই বর্তমান সময়ে অনেক নিউবি প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে এই ব্লগিং সেক্টরে।

আর এই সাধের ব্লগ থেকে টাকা ইনকামের স্বপ্ন দেখছে অনেকেই। তবে এই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিনত করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো মাইক্রো নিস ব্লগিং। যদি আপনি ছোট পরিসরে এই ব্লগিং সেক্টরে নিজেকে যুক্ত করতে চান।

তাহলে Micro Niche Blogging হবে আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ পথ। সত্যি বলতে একটি অথোরিটি ব্লগের সাথে যদি একটি মাইক্রো নিস ব্লগ কে তুলনা করি। তাহলে যারা নতুন কিংবা শুধুমাএ ইনকামের আশায় ব্লগিং সেক্টরে যুক্ত হতে চায়।

তাদের উচিত এই মাইক্রো নিস ব্লগিং দিয়েই তার Blogging Career এ পদার্পন করা ৷ তার মূল কারন হলো, অন্যান্য ব্লগের তুলনায়। মাইক্রো নিস নিয়ে কাজ করা তুলনামূলক সহজ এবং একটি অথোরটি ব্লগের তুলনায় Micro Niche এ কম পরিশ্রম করতে হয়।

যদি একটি অথোরিটি ব্লগ ও একটি মাইক্রো নিস ব্লগের তুলনা করা হয়, তবে নতুন ব্লগারদের জন্য যারা শুধুমাত্র ইনকামের আশায় ব্লগিংয়ে প্রবেশ করতে চায়, তাদের উচিত মাইক্রো নিস ব্লগিংকে বেছে নেওয়া।

আপনি আরও পড়ুন:

  • নিস মানে কী?
  • কিভাবে ব্লগের জন্য নিস বাছাই করতে হয়?
  • ফ্রিতে ব্লগসাইট বানানোর সহজ উপায়
  • ব্লগ সাইট থেকে আয় করার সহজ উপায়

মাইক্রো নিস ব্লগ কি (What Is Micro Niche Blog In Bangla)

একটি ব্লগ তৈরি করার আগে সর্বপ্রথম যে বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়, সেটি হলো Blogging Niche। অর্থাৎ, আপনি যে টপিকের উপর ভিত্তি করে একটি ব্লগ তৈরি করবেন, সেই টপিককেই বলা হয় নিস

তবে প্রশ্ন হলো, “নিস তো আমরা সবাই বুঝি, কিন্তু মাইক্রো নিস এটা আবার কী জিনিস?

তাহলে শুনুন, যদি আমরা এই বিষয়টিকে সংক্ষিপ্তভাবে বলি, তাহলে বলবো, “যখন আপনি কোনো স্পেসিফিক টপিককে কেন্দ্র করে একটি ব্লগ নিয়ে কাজ করবেন, তখন সেই ব্লগকে বলা হবে মাইক্রো নিস ব্লগ।”

উদাহরণ হিসেবে ধরুন, আপনি ব্লগিং শুরু করার সময় চিন্তা করলেন যে “Freelancing” নিসে একটি ব্লগ তৈরি করবেন।

এখন আপনি কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে পারবেন।
প্রথমত, এই নিসে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, যদি আপনি সম্পূর্ণ Freelancing নিয়ে একটি ব্লগ তৈরি করতে চান, তাহলে আপনাকে একটি অথোরিটি ব্লগ তৈরি করতে হবে।

কিন্তু এত ঝামেলায় না গিয়ে, আপনি যদি শুধুমাত্র Freelancing এর কোনো স্পেসিফিক ও নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে ব্লগ তৈরি করেন, তাহলে আপনার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

যেমন, Freelancing-কে যদি আমরা আরও কয়েকটি ছোট ছোট অংশে ভাগ করি, তাহলে আপনার সামনে আরও অনেক টপিক আসবে, যেমন: Graphic Design, Web Design ইত্যাদি।

এখন, আপনি যদি এমন কোনো ছোট টপিক নিয়ে একটি ব্লগ তৈরি করেন, তাহলে আপনাকে তেমন ঝামেলায় পড়তে হবে না।
এর পাশাপাশি, আপনি খুব সহজেই এমন একটি ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।

তো, যখন আপনি এমন ছোট কোনো টপিকে কেন্দ্র করে একটি ব্লগ তৈরি করবেন এবং সেই ব্লগ থেকে আয় করবেন, তখন সেই ব্লগকেই বলা হবে মাইক্রো নিস ব্লগ

কেন মাইক্রো নিস ব্লগ বানাবেন?

যদি আপনার ব্লগিং সম্পর্কে একদম অ-আ-ক-খ ধারনা না থাকে, অথচ আপনি ব্লগিং থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনার জার্নি শুরু করার জন্য মাইক্রো নিস ব্লগিং একটি সহজ মাধ্যম।

কারণ:
অন্যান্য ব্লগিংয়ের তুলনায়, মাইক্রো নিসকে গুরুত্ব দিলে আপনি তুলনামূলক কম পরিশ্রমে এবং দ্রুততার সাথে ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

বিষয়টি বিশ্লেষণ করি:

আমরা যারা নতুন ব্লগিং সেক্টরে প্রবেশ করি, আমাদের এই সেক্টরের ব্যাপারে তেমন পরিষ্কার ধারণা থাকে না। এর ফলে দুই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়:

    1. নিস সিলেকশনে ভুল:
      আপনি ভুল নিস নির্বাচন করতে পারেন।
    2. অথোরিটি নিস ব্লগের দিকে ঝুঁকে পড়া:
      সরাসরি একটি বড় অথোরিটি নিস ব্লগের দিকে ঝুঁকে পড়লে অনেক ঝামেলা তৈরি হয়।

এই দুইটি ভুলের কারণে, আপনি এক সময়ে ব্লগিংয়ে হাপিয়ে পড়বেন এবং যখন আপনি অন্যদের তুলনায় নিজেকে উন্নত করতে ব্যর্থ হবেন, তখন আপনাকে স্বপ্নের ব্লগিং সেক্টর থেকে পিছিয়ে পড়তে হতে পারে।

কিন্তু, আপনি যদি এই ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে দিয়ে কোনো ছোট্ট মাইক্রো নিসে ব্লগিং শুরু করেন, তাহলে আপনার সফলতার পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে। কারণ:

  • কম পরিশ্রম:
    যখন আপনি Micro Niche নিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন, তখন আপনাকে তেমন শ্রম দিতে হবে না। যেমন, একটি অথোরিটি সাইটের মতো আপনাকে বিশদ কন্টেন্ট নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
  • সহজ এসইও:
    যদি আপনার এসইও সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞান থাকে, তবুও আপনি তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে আপনার ব্লগকে র‍্যাঙ্ক করাতে পারবেন।

এই সব বিষয় বিবেচনা করলে, আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কেন মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করা উচিত। আর যদি এখনো পুরোপুরি না বুঝে থাকেন, তাহলে উপরে আলোচনা করা বিষয়গুলো পুনরায় পড়ুন, যাতে পরবর্তী আলোচনা বুঝতে সুবিধা হয়।

মাইক্রো নিস ব্লগ থেকে কত টাকা আয় হয়?

যেহেতু আপনার মূল ফোকাস হলো ব্লগ থেকে ইনকাম করা, তাই Micro Niche Blog থেকে আপনি কতটুকু ইনকাম করতে পারবেন—সেই বিষয়টি সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা দেয়া উচিত।

দেখুন, আপনি যদি একটি নিস কল্পনা করেন, তাহলে লক্ষ্য করবেন যে একটি নিস অনেকগুলো কীওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত। এবং সেই কীওয়ার্ডগুলোর CPC (Cost Per Click) রেট ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হতে পারে।

PRO TIPS:
CPC এর ফুল মিনিং হলো, Cost Per Click—অর্থাৎ, কোনো কীওয়ার্ডে নির্দিষ্ট একটি ক্লিকে আপনি যে পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন, তাকেই বলা হয় CPC (সিপিসি)।

এছাড়াও, প্রতিটি কীওয়ার্ডের CPC রেট ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন, কোনো কীওয়ার্ডের CPC রেট যদি 1$ হয়, তবে অন্য কোনো কীওয়ার্ডের CPC রেট হতে পারে 2$ বা তার বেশি।

এখন, যখন আপনি মাইক্রো নিসে ব্লগ তৈরি করবেন, তখন আপনি সেইসব কীওয়ার্ডের দিকে নজর দিতে পারেন যাদের CPC রেট বেশি। অর্থাৎ, আপনি সরাসরি High CPC কীওয়ার্ড নিয়ে একটি সম্পূর্ণ ব্লগ তৈরি করতে পারবেন।

এরফলে, ইনকামের দিকে অতিরিক্ত চিন্তা করার প্রয়োজন পড়বে না, কারণ আপনি ইতিমধ্যেই High CPC কীওয়ার্ড ভিত্তিক একটি ব্লগ তৈরি করে ফেলেছেন।

আপনি যদি গুগল এডসেন্সের জন্য হাই CPC কীওয়ার্ডের তালিকা ব্যবহার করেন এবং আপনার ব্লগে যদি ভিজিটরের সংখ্যা কম থাকে, তারপরও আপনি সেই নির্ধারিত CPC অনুযায়ী ইনকাম করতে পারবেন।

এখন, যদি আপনি এই ইনকামের পরিমাণকে একটি Authority Website এর সাথে তুলনা করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে Micro Niche এ কম পরিশ্রমে বেশি ইনকাম করা সম্ভব।

কিভাবে মাইক্রো নিস ব্লগ বানানো যায়?

ইনকাম নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এবার আপনাকে জানতে হবে—কিভাবে আপনি একটি মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করবেন।

মনে রাখবেন, আপনি যদি মাইক্রো নিস সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা না নিয়ে শুধুমাত্র ইনকামের দিকে ফোকাস করেন, তাহলে এখানেও আপনাকে বড়সড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই, পরবর্তী আলোচনা গুলো যথেষ্ট মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন।

যখন আপনি একটি মাইক্রো নিস নিয়ে ব্লগ তৈরি করার চেষ্টা করবেন, তখন আপনাকে বেশ কিছু বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এবার চলুন সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করা যাক।

#01- রিসার্চ নিস এবং কিওয়ার্ড

আপনি ব্লগিং সেক্টরে যে কোনো কাজই করুন, আপনাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে নিস এবং কিওয়ার্ড সিলেকশনে

কারণ, আপনি যে বিষয়ে ব্লগ তৈরি করবেন এবং যে ধরনের অডিয়েন্সকে টার্গেট করবেন, তা প্রায় শতভাগ নির্ভর করবে আপনার কিওয়ার্ড এবং নিস রিসার্চের উপর।

যেহেতু আপনি মাইক্রো নিসে কাজ করতে ইচ্ছুক, তাই এই ধাপটিকে কোনোভাবেই স্কিপ করে যেতে পারবেন না।

দেখুন, যদি আপনি একটি অথোরিটি ব্লগ তৈরি করেন, তাহলে সেখানে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতে হবে কন্টেন্ট মেকিং এবং এসইও করার জন্য।

কিন্তু Micro Niche এ কাজ করতে হলে, আপনাকে প্রাথমিক অবস্থাতেই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতে হবে। কারণ, মাইক্রো নিসে আপনি কোনো পূর্ণাঙ্গ নিসকে কেন্দ্র করে ব্লগ তৈরি করবেন না, বরং স্পেসিফিক কোনো কিওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে ব্লগ তৈরি করবেন।

সবার আগে আপনাকে স্পেসিফিক কোনো নিস সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি কোন টপিককে কেন্দ্র করে ব্লগ তৈরি করবেন—এটি পূর্বেই যথেষ্ট রিসার্চের মাধ্যমে নির্ধারণ করে নিতে হবে।

নিস সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেতে দেখুন নিস কি এবং “কিভাবে নিস বাছাই করতে হয়“। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই মাইক্রো ব্লগিং শুরু করার আগে অবশ্যই নিস সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিয়ে নিন।

যখন আপনার নিস সিলেকশন হয়ে যাবে, তখন ধরে নিন আপনি মাইক্রো নিসে ব্লগ তৈরিতে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। এবার আপনাকে সেই নিস-রিলেটেড কিওয়ার্ডগুলোকে শনাক্ত করতে হবে।

এই কিওয়ার্ড নির্বাচনে আপনাকে যথেষ্ট রিসার্চ করতে হবে, কারণ আপনি স্পেসিফিক কিওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে একটি ব্লগ তৈরি করতে যাচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, Online Income একটি বৃহৎ নিস। এখন আপনাকে এই বৃহৎ নিসকে আরও ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করতে হবে। অর্থাৎ, অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত অন্যান্য কীওয়ার্ডগুলোর মধ্যে যেকোনো একটিকে পিক করতে হবে।

যেমন, আপনি যদি Online Income এর রিলেটিভ কীওয়ার্ডগুলোর দিকে তাকান, তাহলে আপনার সামনে বেশ কিছু কীওয়ার্ড আসবে, যেমন:

  • “Online income site”
  • “Online income from mobile”
  • “online income bd” ইত্যাদি।
[ PRO TIPS:
কিওয়ার্ড নির্বাচন করার সময় তিনটি বিষয়ের দিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখবেন:
১. Keyword Difficulty
২. Keyword Search Volume
৩. Keyword CPC

আপনার মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, “ভাই, সব কিছু তো বুঝলাম, কিন্তু এই কাজগুলো আমি করবো কিভাবে?”
যদি আপনার মনে এ ধরনের প্রশ্ন উঠে, তাহলে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, কারণ এর মানে আপনি অজানা কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।

আপনি এই কাজগুলো বিভিন্ন টুলসের মাধ্যমে করতে পারবেন, যেমন:

  • Google Keyword Planner
  • Google Adwords
  • Other Paid or Free Tools. 

প্রথমে, Google Keyword Planner এর সাহায্যে ফোকাস কিওয়ার্ডগুলো বের করুন। এরপর, সেই কিওয়ার্ড নিয়ে ব্লগ তৈরি করলে আপনি কতটুকু ইনকাম করতে পারবেন—এই সম্পর্কে ধারনা নিতে Google Adwords ব্যবহার করুন।

এছাড়াও, এই বিষয়ে আরও রিসার্চ করার জন্য অনলাইনে অনেক ফ্রি বা পেইড টুলস রয়েছে, যেগুলো প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন।

#2- ডোমেইন ও হোস্টিং নির্বাচন করা

যখন আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত নিস নির্বাচন করবেন, তখন আপনার দ্বিতীয় ধাপ হলো ডোমেইন (Domain) এবং হোস্টিং (Hosting) নির্বাচন করা। এই ধাপটিকেও আপনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

কোন ধরনের ডোমেইন কিনতে হবে?

ডোমেইন কেনার সময় লক্ষ্য রাখবেন, আপনার কেনা ডোমেইন যেন কিওয়ার্ড-বেজড (Keyword-Based) হয়। অর্থাৎ, আপনার ডোমেইনে যেন মূল কিওয়ার্ডটি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

⚠️ সতর্কতা:
গুগলের নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনার ডোমেইন সম্পূর্ণরূপে কিওয়ার্ড-বেজড হয়, তাহলে গুগল আপনার ব্লগকে পেনাল্টি দিতে পারে।

কি অদ্ভুত, তাই না? আমি বলছি, ডোমেইনে কিওয়ার্ড রাখতে হবে, আবার আমিই বলছি, কিওয়ার্ড থাকলে গুগল পেনাল্টি দিতে পারে!

তাহলে সমাধান কী?

যদি আপনি শুধু কিওয়ার্ড-বেজড ডোমেইন ব্যবহার করেন, তবে গুগল পেনাল্টির ঝুঁকি সবসময় থাকবে। তবে কিছু স্মার্ট টেকনিক অনুসরণ করলে আপনি এই ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।

PRO TIP:
মনে করুন, আপনি “Samsung Mobile” কিওয়ার্ডে একটি মাইক্রো ব্লগ তৈরি করতে চান। সেক্ষেত্রে ডোমেইন কেনার সময় এভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন:

SamsungMobileBD.com
SamsungMobileGuide.com
SamsungMobileHub.com

অর্থাৎ, কিওয়ার্ডের পাশাপাশি আরও কিছু শব্দ যুক্ত করুন। এতে গুগল পেনাল্টির ঝুঁকি কমে যাবে।

গুগল পেনাল্টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান?
আমার ওয়েবসাইটে “গুগল পেনাল্টি কি? কেন গুগল পেনাল্টি দেয়?” শিরোনামে একটি বিস্তারিত আর্টিকেল রয়েছে। নিচের লিংক থেকে পড়ে নিতে পারেন।

#3- কন্টেন্ট প্ল্যানিং করা

যখন আপনি প্রথম ধাপটি সফলভাবে সম্পন্ন করবেন, তখন দ্বিতীয় ধাপটিও যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে সম্পন্ন করতে হবে। সেই ধাপটি হলো কন্টেন্ট প্ল্যানিং।

আপনি যত SEO-রিলেটেড ব্লগ বা ওয়েবসাইট দেখবেন, তারা সবাই একটি সাধারণ কথা বলবে

“Content is King.”

আমি এই কথাটির সাথে সম্পূর্ণ একমত। কারণ, আপনার ব্লগে মানুষ কোনো কারণ ছাড়াই ভিড় করবে না। ভিজিটর তখনই আপনার ব্লগে আসবে, যখন তারা কোনো তথ্য জানার জন্য গুগলে সার্চ করবে।

সুতরাং, আপনাকে কন্টেন্ট এমনভাবে প্ল্যান করতে হবে, যাতে ভিজিটররা আপনার ব্লগে আসার পর নিরাশ না হয়। অর্থাৎ, তারা যে বিষয় সম্পর্কে জানতে চায়, সেই বিষয়টি যেন A to Z আপনার ব্লগেই পেয়ে যায়।

✅ কন্টেন্ট প্ল্যানিংয়ের প্রধান বিষয়সমূহ

আপনার ব্লগের কন্টেন্ট প্ল্যানিং করার সময় আপনাকে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে—

1️⃣ Content Quality
2️⃣ Content Quantity
3️⃣ Content Word Count

1️⃣ কন্টেন্টের গুণগত মান (Content Quality)

সবার আগে কন্টেন্টের মান (Quality) নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার ব্লগে প্রকাশিত কন্টেন্ট যেন শুধু শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।

বরং, ভিজিটররা যেন সেখান থেকে কিছু শিখতে পারে, তাদের অজানা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারে।

2️⃣ কন্টেন্টের সংখ্যা নির্ধারণ (Content Quantity)

এরপর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার ব্লগে মোট কতগুলো কন্টেন্ট পাবলিশ করবেন। এটি নির্ভর করবে আপনি কোন কিওয়ার্ড বা নিস নিয়ে কাজ করছেন।

যেহেতু আপনি একটি মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করবেন, তাই সেই নিস সম্পর্কিত সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট লিখতে হবে।

3️⃣ কন্টেন্টের শব্দ সংখ্যা (Content Word Count)

আপনার মোট কত শব্দের কন্টেন্ট লিখতে হবে, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে—
✅ আপনি কোন নিস বেছে নিয়েছেন
✅ আপনি কোন কিওয়ার্ড টার্গেট করেছেন

উদাহরণ:

  • কিছু মাইক্রো নিস ব্লগ আছে, যেখানে ৩০,০০০ শব্দের কন্টেন্ট থাকলেই যথেষ্ট।
  • আবার কিছু বড় নিস আছে, যেখানে এর থেকেও বেশি কন্টেন্ট লিখতে হয়

যেমন, যদি আপনি “Samsung Mobile” নিস বেছে নেন, তাহলে আপনাকে স্যামসাং সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয় কভার করতে হবে। যেন কোনো গুরুত্বপূর্ণ টপিক বাদ না যায়।

আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু টপিক:
✔️ SEO-ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম
✔️ গুগল কী? গুগল কেন এত জনপ্রিয়?
✔️ Blogger নাকি WordPress: কোনটি ব্যবহার করবেন?

#4- এসইও অপটিমাইজেশন করা

চতুর্থ ধাপে আপনাকে SEO (Search Engine Optimization) নিয়ে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ, আপনার লক্ষ্যযুক্ত অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্য ব্লগটি অপটিমাইজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যখন আপনি কন্টেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী সব কন্টেন্ট ব্লগে পাবলিশ করবেন, তখন সেই কন্টেন্টগুলোর পজিশন চেক করতে হবে।

SEO কি? কিভাবে SEO শিখবেন? আমরা সাধারণত অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের তুলনায় গুগলকেই বেশি গুরুত্ব দিই। তাই সবার আগে আপনাকে গুগলে গিয়ে আপনার ফোকাস কিওয়ার্ড সার্চ করতে হবে।

এখন আপনাকে দেখতে হবে—
✅ আপনার কন্টেন্ট গুগলের সার্চ রেজাল্টে শো করছে কিনা
✅ শো করলে, কত নম্বর পেজের কোন পজিশনে আছে

নতুন ব্লগের পজিশন সাধারণত অনেক পেছনে থাকে। তবে এতে হতাশ না হয়ে SEO অপটিমাইজেশনের কাজ নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।

SEO অপটিমাইজেশনে যেসব কাজ করতে হবে

আপনাকে On Page SEO এবং Off Page SEO তে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।

On-Page SEO:
✔️ ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার
✔️ মেটা টাইটেল ও মেটা ডিসক্রিপশন অপটিমাইজ করা
✔️ ইমেজ Alt টেক্সট ব্যবহার
✔️ ইন্টারনাল লিংক বিল্ডিং

Off-Page SEO:
✔️ ব্যাকলিংক তৈরি করা
✔️ সোশ্যাল সিগন্যাল ব্যবহার
✔️ গেস্ট পোস্টিং

Bonus Tip:
যখন আপনি Off-Page SEO করবেন, তখন ব্যাকলিংকের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিন।
✅ প্রথমে আপনার কম্পিটিটরদের ব্লগ চেক করুন।
✅ চেষ্টা করুন, তাদের ব্লগ থেকেই ব্যাকলিংক নেওয়ার।

ব্যাকলিংক সম্পর্কে আরও জানতে চান?
আমার ওয়েবসাইটে “ব্যাকলিংক কি? কেন ব্যাকলিংক করবেন?” শিরোনামে একটি বিস্তারিত আর্টিকেল রয়েছে।

#5 – ব্লগকে মনিটাইজ করা

মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করার সর্বশেষ ধাপ হলো মনিটাইজেশন চালু করা, যার মাধ্যমে আপনি মূলত আপনার Micro Niche Blog থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

তবে প্রশ্ন হলো, “কখন এবং কিভাবে আপনার ব্লগকে মনিটাইজ করবেন?”

তো, যারা একেবারে নতুন, তারা প্রাথমিক অবস্থায় ব্লগের কন্টেন্ট এবং এসইও-এর দিকে না ছুটে মনিটাইজেশনের দিকে ছুটে থাকে। কিন্তু তাদের মাথায় এই চিন্তাটি কখনই আসে না যে, ব্লগে যদি ভিজিটর না থাকে।

তাহলে, সেই ব্লগকে মনিটাইজ করে লাভ কি হবে? তাই, আপনিও তাদের মতো ভুল করার চেষ্টা করবেন না। প্রথমে আপনার ব্লগকে ভিজিটরের জন্য উপযুক্ত করুন।

এরপর, যখন আপনার ব্লগে মোটামুটি পর্যায়ের ভিজিটর আসবে, ঠিক তখনই আপনি সেই ব্লগকে মনিটাইজ করে নিবেন।

তবে হ্যাঁ, যতদিন আপনি ব্লগিং সেক্টরের সাথে যুক্ত থাকবেন, ততদিন শুধু একটা কথা মাথায় রাখবেন—এই সেক্টরে যদি আপনার কাছে ভিজিটর থাকে, তাহলে আপনি অনেক উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

কিন্তু, যদি আপনার ব্লগে ভিজিটর না থাকে, তাহলে আপনার ইনকামের স্বপ্নটাই জলে ভেসে যাবে।

মাইক্রো নিস ব্লগ বানাতে কত টাকা খরচ হয়?

যেহেতু আপনি সবকিছুই জানতে পারলেন, তাই আপনার আরও একটি বিষয় জেনে নেওয়া উচিত – “একটি মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করতে মোট কত টাকা খরচ হয়?”

এই প্রশ্নের উত্তরটি একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।

প্রথমে আপনাকে জানতে হবে যে, একটি মাইক্রো নিস ব্লগ তৈরি করতে কোন কোন জায়গায় ব্যয় করতে হয়। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে আপনাকে মোট ৩টি ধাপে ব্যয় করতে হবে:

  1. Domain & Hosting
  2. Content
  3. SEO Optimize

প্রাথমিকভাবে সবাইকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে হবে। এরপর বাকি দুইটি ধাপ – কন্টেন্ট এবং SEO Optimize – থাকে। যদি এই কাজগুলোর জন্য আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনাকে কোনো অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে না।

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি নিজেই আপনার Micro Niche Blog-এর কন্টেন্ট লিখতে পারেন, তাহলে একজন কন্টেন্ট রাইটারের জন্য যে খরচ করা হত, সেখানেই আপনাকে কোনো ব্যয় করতে হবে না।

ঠিক একইভাবে, যদি আপনি নিজের এসইও অপটিমাইজেশন করতে পারেন, তাহলে আপনাকে সেখানে কোনো অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না।

কিন্তু, আপনি যদি এই কাজগুলো অন্য কারো মাধ্যমে করিয়ে নিতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই বেশ মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হবে।

কোন নিস নিয়ে কাজ করবেন?

এবার আপনার জন্য কিছু বোনাস টিপস দেওয়া হলো। আপনি এতোক্ষনে মাইক্রো নিস ব্লগ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলেন। হয়তবা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, আপনি ব্লগিং করলে মাইক্রো নিস ব্লগ নিয়ে কাজ করবেন।

ঠিক এই সময়ে আপনার সামনে একটি বড় সমস্যা এসে দাঁড়াবে। সেই সমস্যাটি হলো, “কোন নিস নিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন?”

তবে, এই সমস্যা শুধুমাত্র আপনার নয়; বরং প্রত্যেক নতুন ব্লগারেই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে, এই সমস্যার কিছু সহজ সমাধান আছে। চাইলে আপনি নিম্নলিখিত টিপসগুলো ফলো করতে পারেন।

যখন আপনি Micro Niche Blog তৈরি করার জন্য নিস সিলেকশন করবেন, তখন মোট তিনটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন:

  1. Low Competition
  2. High Search Volume
  3. High CPC Rate

যদি আপনি নিস সিলেকশনে এই তিনটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখেন, তাহলে আশা করা যায় যে আপনি খুব সহজেই আপনার কাঙ্ক্ষিত নিসকে ডিটেক্ট করতে পারবেন।

আমাদের শেষকথা

সবশেষে কিছু কথা না বললেই নয়। আপনি যদি চান যে ব্লগিং করে নিজের একটা সফল ক্যারিয়ার গড়বেন, তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় ইনকামের দিকে ফোকাস না রেখে, কিভাবে আপনার ব্লগে ভিজিটর বাড়ানো যাবে – সেই দিকে ফোকাস রাখুন।

কারণ, যখন আপনার কাছে প্রচুর পরিমাণে অডিয়েন্স থাকবে, তখন আপনার ইনকাম করার অনেকগুলো পথ উন্মুক্ত হবে, হোক তা মাইক্রো নিস ব্লগ বা অন্য কোনো সেক্টর।

আর ব্লগিং সম্পর্কিত নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য ইনফোড়তল গের সাথে থাকুন, তাহলে অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top