আপনি কি আপনার নিজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওয়েব হোস্টিং (Web Hosting) সম্পর্কে জানতে হবে। ওয়েব হোস্টিং হলো একটি অনলাইন মেমোরি কার্ড সার্ভিস যা আপনার ওয়েবসাইটের ফাইল এবং ডেটা সংরক্ষণ করে।
যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখে ব্রাউজার ইনটার করে, তখন ওয়েব হোস্টিং সার্ভারের (Web Server) সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলি ব্রাউজারের কাছে পাঠায়।
আর তখন আপনি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।
ওয়েবসাইট চালু করতে হলে ওয়েব হোস্টিং ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। তাই ওয়েব হোস্ট কি, ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার এবং কোন হোস্টিং আপনার জন্য ভালো হবে এসব নিয়ে জানতে হবে।
তার সাথে ওয়েব হোস্টিং এর দাম কত টাকা, ওয়েব হোস্টিং এর প্রকারভেদ এবং কিভাবে কোথায় থেকে Web Hosting কিনবেন এসব নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন আজকের এই হোটিং নিয়ে লেখা আর্টিকেল এর মাধ্যমে।
তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক Web Hosting ki এবং ওয়েব হোস্টিং কাকে বলে।
ওয়েব হোস্টিং কি (What is Web Hosting in Bangla)
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ওয়েব হোস্টিং হল আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি অনলাইন স্টোরেজ। যেমন আপনার বাড়িতে আপনার জিনিসপত্র রাখার জন্য একটি আলমারি থাকে, ঠিক তেমনি ওয়েবসাইট তৈরির জন্য আপনার ওয়েবসাইটের ফাইল এবং ডেটা রাখার জন্য একটি অনলাইন স্টোরেজ প্রয়োজন।
আর আপনি যখন হোস্টিং কিনবেন তখন হোস্টিং প্রভাইডার আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণের একটি অনলাইন স্টোরেজ সার্ভারে জায়গা দিবে।
তার পর আপনার ফাইল বা ডাটাগুলা হতে পারে Text Article, Audio File, Image File, Media সেই অনলাইন স্টোরেজে আপলোড করতে পারবেন।
আর সেই সার্ভারটি ২৪ ঘন্টা চালু থাকে যার জন্য যখন খুশি তখন আপনার ওয়েবসাইটে ভিসিট করা যাবে। আর আমাদের Info portal Bd ওয়েবসাইটিও কোন একটি ওয়েব হোস্টিং সার্ভারে হোস্ট করেছি।
আশা করছি ওয়েব হোস্টিং বলতে কী বোঝায়? আপনি বুঝতে পেরেছেন। আপনাকে আরোও সহজভাবে বুঝানোর জন্য নিচে একটি উদাহরণ দেওয়া হলো।
ওয়েব হোস্টিংয়ের উদাহরণ
ধরুন, আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন যাতে আপনার ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও রয়েছে। আপনি এই ওয়েবসাইটটি আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করতে চান।
কিন্তু আপনার কম্পিউটারে এই সমস্ত ফাইল সংরক্ষণ করলে, আপনার বন্ধু এবং পরিবার আপনার ওয়েবসাইটটি দেখতে পারবে না। কারণ আপনার কম্পিউটার তাদের কম্পিউটার বা মোবাইলের সাথে সংযুক্ত নয়।
এক্ষেত্রে, আপনাকে একটি ওয়েব হোস্টিং সার্ভার বা হোটিং স্টোরেজ নিতে হবে। আর সেই ওয়েব হোস্টিং সার্ভারে আপনার সমস্ত ফাইল এবং ডেটা সংরক্ষণ করতে পারবেন। তারপর, আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা আপনার বন্ধু এবং পরিবারকে দিতে পারবেন।
তারা আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখে ব্রাউজার ইনটার করলে, ওয়েব হোস্টিং সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে এবং আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলি ব্রাউজারের কাছে পাঠাবে। ফলে আপনার বন্ধু এবং পরিবার আপনার ওয়েবসাইটটি দেখতে পারবে।
তবে তার জন্য আপনার একটি ভ্যালিড ডোমাইন থাকতে হবে যাকে ওয়েব এড্রেস বলা হয়ে থাকে। ডোমাইন নাম কি বা ডোমাইন মানে কি এই নিয়ে আমাদের ব্লগে অন্য একটি আর্টিকেল আছে। আপনি বিস্তারিত জানতে ঐ আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
তবে মনে রাখতে হবে একটি ওয়েবসাইটে অনলাইন এ রাখার জন্য অবশ্যয় Domain and Hosting লাগবে। যে আমাদের Website এর ডোমাইন নাম InfoportalBD.com.
আপনার মনে আবার প্রশ্ন আসতে পারে যে ওয়েব হোস্টিং নিয়ে জানতে পেরেছি কিন্তু Web Server কি এবং Web Host কি?
ওয়েব সার্ভার এবং ওয়েব হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য
ওয়েব সার্ভার এবং ওয়েব হোস্টিং দুটি ভিন্ন ধারণা। ওয়েব সার্ভার (Web Server) হল একটি কম্পিউটার সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার যা আপনার ওয়েবসাইটের ফাইল এবং ডেটা প্রদান করে।
আর ওয়েব হোস্টিং (Web Host) হল একটি অনলাইন স্টোরেজ বা অনলাইন মেমোরি যা আপনার ওয়েবসাইটের ফাইল এবং ডেটা সংরক্ষণ করে।
ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার? (Types of Web Hosting?)
আপনি যখনি কোন ওয়েবসাইট বানানোর চিন্তা করবেন তার সাথে প্রথমে আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কোন ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করবেন।
কেননা ওয়েব হোস্টিং বিভিন্ন ধরনের হয়, প্রতিটি হোস্টিং এর ধরনের নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তাগুলির উপর নির্ভর করে আপনার জন্য ঠিক কোন ধরনের ওয়েব হোস্টিং দরকার সেটা নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।
এখানে, আমি ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি। এবং কোন হোস্টিং এর কাজ কেমন তার সাথে প্রতিটি হোস্টিং এর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলিও নিয়ে আলোচনা করব।
ওয়েব হোস্টিং প্রধানত তিনটি প্রকারের হয়ে থাকে:
- শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting)
- ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার হোস্টিং (Virtual Private Hosting VPS)
- ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং (Dedicated Hosting)
তবে এছাড়াও আরো কয়েক ধরনের হোস্টিং এর প্রকার রয়েছে যেগুলা ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহার করা যায়। আর সেই প্রকারগুলা নিয়ে আপনাকে জানতে হবে।
- ক্লাউড হোস্টিং (Cloud Hosting)
- রিসেলার হোস্টিং(Reseller Hosting)
- ফ্রি হোস্টিং (Free Hosting)
এতক্ষন Web Hosting এর প্রকারগুলা নিয়ে জানতে পারলেন কিন্তু হোস্টিং এর প্রকার গুলা নিয়ে বিস্তারিত জানেন না। তো চলুন প্রত্যেক প্রকারগুলা নিয়ে জেনে নেয়।
শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting) কি
ওয়েব হোস্টিং হল এমন একটি সার্ভিস যা ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইল, ডাটা এবং কোডগুলিকে সংরক্ষণ করার জন্য একটি শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করে। শেয়ার্ড হোস্টিং হল ওয়েব হোস্টিংয়ের সবচেয়ে সাধারণ ধরন, যেখানে একটি একক সার্ভার অনেকগুলি ওয়েবসাইট হোস্ট করে।
শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের মূল ধারণা হল যে একই সার্ভার ব্যবহার করে অনেকগুলি ওয়েবসাইটকে হোস্ট করা। এটি হোস্টিং প্রোভাইডারদের জন্য খরচ কমাতে সাহায্য করে, যা তারা গ্রাহকদের কাছে কম মূল্যে হোস্টিং পরিষেবা প্রদান করতে ব্যবহার করতে পারে।
তার সাথে শেয়ার্ড হোস্টিং হল সবচেয়ে কম দামে ক্রয় করা যায় এবং সহজে ব্যবহার করা যায়।
শেয়ার্ড হোস্টিং এর সুবিধা (Benefits of Shared Hosting)
- কম দাম: শেয়ার্ড হোস্টিং হল সবচেয়ে সস্তা ধরনের ওয়েব হোস্টিং। আপনি প্রতি মাসে মাত্র কয়েক ডলারে একটি শেয়ার্ড হোস্টিং এর সার্ভিস কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।
- সহজ ব্যবহার যোগ্য: শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করা খুব সহজ। আপনাকে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলি আপলোড করতে হবে এবং তারপর আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ডোমেন নাম সেট করতে হবে।
- প্রযুক্তিগত এক্সপার্ট দরকার নাই: শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের জন্য আপনাকে কোন প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। আপনি একটি সহজ কন্ট্রোল প্যানেল ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে পারেন।
শেয়ার্ড হোস্টিং এর অসুবিধা (Disadvantages of shared hosting)
- সীমিত রিসোর্স: শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে সীমিত রিসোর্স থাকে। এর মানে হল যে আপনার ওয়েবসাইট যদি খুব বেশি ভিজিটর আসে, তাহলে এটির স্পিড স্লো হয়ে যেতে পারে বা এমনকি ডাউন হতে পারে।
- নিরাপত্তা ঝুঁকি: শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে সিকুরিটির ঝুঁকি রয়েছে। যদি অন্য কোন ওয়েবসাইট নিরাপত্তাহীন হয়, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটও ঝুঁকিতে থাকতে পারে।
বাংলাদেশে শেয়ার্ড হোস্টিং এর দাম:
বাংলাদেশে শেয়ার্ড হোস্টিং এর দাম সাধারণত প্রতি মাসে 100 থেকে 1000 টাকার মধ্যে হয়। কিছু হোস্টিং প্রদানকারী 100 টাকারও কম দামে শেয়ার্ড হোস্টিং সার্ভিস প্রদান করে।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার হোস্টিং কি (Virtual Private Hosting VPS)
ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার হোস্টিং (VPS) হল একটি এমন ধরনের ওয়েব হোস্টিং যেখানে একক সার্ভারকে একাধিক ওয়েবসাইটের জন্য ভাগ করা হয়, কিন্তু প্রতিটি ওয়েবসাইটকে একটি পৃথক ভার্চুয়াল পরিবেশে হোস্ট করা হয়।
এটি শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের মতো, তবে প্রতিটি ওয়েবসাইটকে রিসোর্সগুলির একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে অ্যাক্সেস দেওয়া হয়, যা এটিকে আরও ভালো নিয়ন্ত্রণ এবং কাজের সুবিধা পাওয়া যায়।
VPS হোস্টিংয়ের সুবিধা (Benefits of VPS)
- উন্নত সার্ভিস: VPS হোস্টিংয়ে প্রতিটি ওয়েবসাইটকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে রিসোর্স দেওয়া হয়, যা এটিকে শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের তুলনায় আরও দ্রুত এবং পরিচালনা করা যায়।
- নিয়ন্ত্রণ: VPS হোস্টিং গ্রাহকদের তাদের ওয়েবসাইটগুলির রিসোর্সগুলিকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি তাদের ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতা এবং সিকুরিটি উন্নত করার জন্য সেটিংস কাস্টমাইজ করতে দেয়।
- নিরাপত্তা: VPS হোস্টিং প্রতিটি ওয়েবসাইটকে একটি পৃথক ভার্চুয়াল প্যাকেজে হোস্ট করে। এটি একটি ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার সমস্যা হলেও অন্য ওয়েবসাইটগুলির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমা।
VPS হোস্টিংয়ের অসুবিধা (Disadvantages of VPS Hosting)
- সহজ ব্যবহার নই: VPS হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে একটু কঠিন। এই হোস্টিং প্যাকেজে হোস্টিং নিয়ে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকলে কাজ করতে পারবে না।
- বেশি ব্যয়বহুল: VPS হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।
VPS হোস্টিংয়ের দাম
VPS হোস্টিংয়ের দাম নানা রকম হতে পারে। সাধারণত, আপনি যত বেশি রিসোর্স লাগবে, দাম তত বেশি। বাংলাদেশে VPS হোস্টিংয়ের দাম সাধারণত প্রতি মাসে 1000 থেকে 5000 টাকার মধ্যে হয়।
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং (Dedicated Hosting) কি
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং হল এমন ধরনের ওয়েব হোস্টিং যেখানে একজন গ্রাহক একটি পুরো সার্ভার ভাড়া করে নেয়। এই সার্ভারটি শুধুমাত্র সেই গ্রাহকের জন্য ব্যবহার করা হয়, এবং তিনি এটিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং হল ওয়েব হোস্টিংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য ধরন হোস্টিং প্ল্যান। এটি বড় ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য একটি প্ল্যান যা কিনা প্রচুর পরিমাণে রিসোর্স এবং সার্ভিস প্রয়োজন।
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের সুবিধা (Benefits of Dedicated Hosting)
- সর্বোচ্চ সার্ভিস: ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের সাথে, আপনার ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনটিকে কখনই অন্য ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের সাথে রিসোর্স শেয়ার করতে হবে না। এটি দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সার্ভিস নিশ্চিত করে।
- সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ: ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং আপনাকে আপনার সার্ভারটিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে দিবে। আপনি রিসোর্সগুলিকে কাস্টমাইজ করতে পারেন, সফ্টওয়্যার ইনস্টল করতে পারবেন এবং সিস্টেম সেটিংস পরিবর্তন করতে পারেন।
- সর্বোচ্চ নিরাপত্তা: ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং আপনাকে আপনার সার্ভারটিকে আরও নিরাপদ সার্ভিস দিবে। এবং আপনার সার্ভারটিকে অন্য ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারেন।
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের অসুবিধা (Disadvantages of Dedicated Hosting)
- বেশি ব্যয়বহুল: ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং হল ওয়েব হোস্টিংয়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্যাকেজ।
- হোস্টিং ধারণা: ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং পরিচালনা করতে আপনার হোস্টিং নিয়ে ভালো ধারনা থাকতে হবে। না হলে আপনি কাজ করতে পারবেন না।
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের দাম
ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের দাম বিভিন্ন রকম হয়। সাধারণত, সার্ভারটির শক্তি এবং বৈশিষ্ট্যগুলির উপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশে ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিংয়ের দাম সাধারণত প্রতি মাসে 10,000 থেকে 100,000 টাকার মধ্যে হয়।
ক্লাউড হোস্টিং কি (Cloud Hosting)
ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য ক্লাউড হোস্টিং একটি জনপ্রিয় হোস্টিং প্যাকেজ। ক্লাউড হোস্টিং হল এমন একটি ধরনের ওয়েব হোস্টিং যেখানে ওয়েবসাইটগুলি একাধিক ভার্চুয়াল সার্ভারগুলির একটি ক্লাস্টারে হোস্ট করা হয়।
এই সার্ভারগুলি বিশ্বজুড়ে অবস্থিত হতে পারে, যা সার্ভার লোড এবং আপটাইম উন্নত সার্ভিস দিতে সহায়তা করে।
ক্লাউড হোস্টিংকে তিনটি প্রধান স্তরে ভাগ করা যায়
- ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসাবে সার্ভিস (IaaS): IaaS হল ক্লাউড হোস্টিংয়ের সবচেয়ে মৌলিক স্তর। এটি ভার্চুয়াল সার্ভার, স্টোরেজ, নেটওয়ার্কিং এবং অন্যান্য হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার সার্ভিসগুলিকে অ্যাক্সেস দেয়।
- প্ল্যাটফর্ম হিসাবে সার্ভিস (PaaS): PaaS হল IaaS এর উপরে একটি স্তর। এটি ডেভেলপারদের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলি তৈরি এবং রান করার জন্য একটি সম্পূর্ণ প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে।
- অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে সার্ভিস (SaaS): SaaS হল PaaS এর উপরে একটি স্তর। এটি ব্যবহারকারীদের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করার জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ প্রদান করে।
ক্লাউড হোস্টিংয়ের সুবিধা (Benefits of Cloud Hosting)
- স্কেলযোগ্যতা: ক্লাউড হোস্টিং স্কেলযোগ্য, যার অর্থ আপনি আপনার ওয়েবসাইটের চাহিদা অনুযায়ী রিসোর্সগুলি আপস্কেল বা ডাউনস্কেল করতে পারেন।
- উন্নত আপটাইম: ক্লাউড হোস্টিং সার্ভারগুলি বিশ্বজুড়ে অবস্থিত, যা সার্ভার লোড এবং আপটাইম উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি নিশ্চিত করে যে আপনার ওয়েবসাইট সর্বদা ব্যবহারকারীদের জন্য লাইভ থাকে।
- নিরাপত্তা: ক্লাউড হোস্টিং প্রদানকারীরা সাধারণত শক্তিশালী নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলি অফার করে। এটি আপনার ওয়েবসাইট এবং ডেটাকে অননুমোদিত অ্যাক্সেস, হ্যাকিং এবং অন্যান্য নিরাপত্তা হুমকি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
- রেস্পন্সিভ: ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করা সাধারণত অন্য সব হোস্টিং থেকে সামান্য সহজ। এটি ওয়েবসাইট হোস্টিং শুরু করার জন্য একটি ভালো প্ল্যান হতে পারে।
ক্লাউড হোস্টিংয়ের অসুবিধা (Disadvantages of Cloud Hosting)
- দামের দিক: ক্লাউড হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। তবে, এটি স্কেলযোগ্যতার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত খরচগুলি অন্তর্ভুক্ত করে।
- জটিলতা: ক্লাউড হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি কঠিন কাজ। এটি বিশেষ করে নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য কথাটি সত্য।
রিসেলার হোস্টিং কি (Reseller Hosting)
রিসেলার হোস্টিং হল এমন ধরনের হোস্টিং সার্ভিস যেখানে আপনি একটি হোস্টিং প্রদানকারীর কাছ থেকে একটি বড় হোস্টিং প্যাকেজ কিনেন এবং তারপর সেই রিসোর্সগুলিকে ছোট ছোট অংশে বিক্রি করেন।
রিসেলার হোস্টিং আপনাকে আপনার নিজের ওয়েব হোস্টিং ব্যবসা শুরু করার সাহায্য করে।
রিসেলার হোস্টিংয়ের সুবিধা (Benefits of Reseller Hosting)
- কম খরচ: রিসেলার হোস্টিং সাধারণত শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে কম ব্যয়বহুল কারণ এটা রিসেলার প্যাকেজ।
- লাভের সুযোগ: আপনি আপনার রিসেলার হোস্টিং সার্ভিসগুলা বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন।
- স্কেলযোগ্যতা: আপনি আপনার ব্যবসার চাহিদা অনুযায়ী আপনার রিসেলার হোস্টিং সার্ভিস স্কেল করতে পারেন।
রিসেলার হোস্টিংয়ের অসুবিধা (Disadvantages of Reseller Hosting)
- নিজ দায়িত্ব: আপনি আপনার রিসেলার হোস্টিং গ্রাহকদের জন্য দায়ী।
- হোস্টিং নিয়ে আইডিয়া: রিসেলার হোস্টিং পরিচালনা করার জন্য কিছু প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন।
ফ্রি হোস্টিং কি (Free Hosting)
ফ্রি হোস্টিং হল এমন একটি ধরনের ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস যেখানে আপনি কোনও অর্থ প্রদান না করে আপনার ওয়েবসাইট ফ্রিতে হোস্ট করতে পারেন। ফ্রি হোস্টিং দিয়ে আপনি বিভিন্ন কাজের প্র্যাকটিস করতে পারবেন।
Free Hosting এর পেমেন্ট করা ছাড়া যদিও ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় কিন্তু এর অনেক অসুবিধাও আছে। কিন্তু আপনি শুধু মাত্র কিছু ফাংশন এবং বুঝার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
তবে আপনি যদি প্রফেশনালভাবে ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যয় হোস্টিং ক্রয় করে ব্যবহার করতে হবে।
কেননা যেকোন সময় ফ্রি হোস্টিং এর ওয়েবসাইট ভেনিস হয়ে যেতে পারে। আর তার সাথে আপনি আপনার সকল ডাটা হারিয়ে ফেলবেন।
ফ্রি হোস্টিং এর সুবিধা (Benefits of Free Hosting)
- কোন খরচ নেই: ফ্রি হোস্টিং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
- সহজ ব্যবহার: ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানানো কঠিন নই। আপনাকে শুধুমাত্র একটি ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানি খুঁজে নিতে হবে এবং রেজিস্টেশন করলেই পারবেন।
- ফ্রি ফিচারস: অনেক ফ্রি হোস্টিং প্রদানকারী তাদের গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ ফিচার প্রদান করে, যেমন ডোমেইন নাম, ইমেল অ্যাকাউন্ট, এবং ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম।
ফ্রি হোস্টিং এর অসুবিধা (Disadvantages of Free Hosting)
- সীমাবদ্ধতা: ফ্রি হোস্টিং প্রায়ই সীমাবদ্ধতা দেয়, যেমন সীমিত স্পেস, সীমিত ট্র্যাফিক এবং বিজ্ঞাপন।
- নিরাপত্তা: ফ্রি হোস্টিং ব্যবহারে নিরাপত্তা থাকেনা। যখন ইচ্ছা তখন সাসপেন্ড হতে পারে।
- সাপোর্ট সিস্টেম: ফ্রি হোস্টিং অন্য সব হোস্টিং কোম্পানির মত সাপোর্ট দিবে না, যেমন আপটাইম, সাপোর্ট এবং স্কেলেবিলিটি।
আপনার কোন হোস্টিং কেনা উচিত (Which hosting should you buy)
আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনাকে একটি হোস্টিং প্রদানকারী কোম্পানি নির্বাচন করতে হবে। হোস্টিং হল অনলাইন স্টোরেজ যা আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলিকে ইন্টারনেটে সংরক্ষণ করে এবং অ্যাক্সেসযোগ্য করে তোলে।
অনলাইন বাজারে বিভিন্ন ধরণের হোস্টিং প্রদানকারী কোম্পানি রয়েছে, প্রতিটিটির নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। আপনার জন্য কোন হোস্টিং সঠিক তা নির্ধারণ করতে, আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা এবং বাজেট বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তাগুলি বিবেচনা করা হল হোস্টিং নির্বাচন করার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে একটি।
আপনার ওয়েবসাইটটি কী ধরণের কাজের জন্য হোস্ট করবেন? এটি কতটা ট্র্যাফিক পাবেন? এটি কোন ধরণের জন্য বেশি প্রয়োজন? এই সকল দিক বিবেচনা করতে হবে।
আপনার ওয়েবসাইট যদি একটি ছোট ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট হয়, তাহলে শেয়ার্ড হোস্টিং দিয়েই হবে। শেয়ার্ড হোস্টিং সাধারণত কম ব্যয়বহুল হয়। যদিও সীমিত বা লিমিটেড সার্ভিস দিয়ে থাকে।
আপনার ওয়েবসাইট যদি একটি বড় ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট হয় বা প্রচুর পরিমাণে ট্র্যাফিক পাবেন, তাহলে ডেডিকেটেড হোস্টিং বা VPS হোস্টিং নিতে হবে।
ডিকেটেড হোস্টিং আপনাকে একটি সম্পূর্ণ সার্ভারের অ্যাক্সেস প্রদান করে, যা আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তাগুলি পূরণ করার জন্য আরও রিসোর্স প্রদান করে।
VPS হোস্টিং আপনাকে একটি ব্যক্তিগত ভার্চুয়াল সার্ভারের অ্যাক্সেস প্রদান করে, যা আপনাকে ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের তুলনায় কম ব্যয়ে আরও রিসোর্স প্রদান করে।
হোস্টিং খরচ পরিবর্তিত হয় আপনার । শেয়ার্ড হোস্টিং সাধারণত সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের হয়ে থাকে, আর ডেডিকেটেড হোস্টিং সবচেয়ে ব্যয়বহুল। আপনার বাজেট বিবেচনা করে একটি হোস্টিং নির্বাচন করুন যা আপনার প্রয়োজনীয়তাগুলি পূরণ করে।
ওয়েব হোস্টিং কোথায় থেকে কিনবেন (Where to buy web hosting)
যদি আপনার মাস্টার কার্ড না থাকে, তাহলে আপনি বাংলাদেশি হোস্টিং প্রদানকারীদের কাছ থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন। তারা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী বিকাশ, নগত, উপায় এবং ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করে।
এতে করে আপনি সহজেই যেকোন সময় পেমেন্ট প্রদান করে আপনার প্রয়োজনীয় হোস্টিং প্যাকেজ ক্রয় করতে পারবেন। বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় হোস্টিং প্রদানকারী হল:
- Exonhost.com
- SatisfyHostg.com
- Hostever.com
- Hostingbangladesh.com
- WebHostBD.com
- DhakaWebHost.com
আপনার যদি ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট কার্ড থাকে, তাহলে আপনি আন্তর্জাতিক হোস্টিং প্রদানকারীদের কাছ থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন। তারা বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের জন্য হোস্টিং সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
আন্তর্জাতিক কিছু জনপ্রিয় হোস্টিং প্রদানকারী হল:
- Namecheap.com
- Hostinger.com
- Godaddy.com
উপড়ের তালিকাই দেওয়া সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানিগুলা ভালো লাইফসাপোর্ট দিয়ে থাকে। তার মানে হলো আপনি কোন সমস্যায় পরলে তাদের কোম্পানিতে যোগাযোগ করলে সমাধান করে দিবে।
Faqs
ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন?
আপনার ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটে প্রকাশ করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলিকে কোথাও সংরক্ষণ করতে হবে। ওয়েব হোস্টিং আপনাকে সেই ফাইলগুলি সংরক্ষণ এবং পরিচালনা করতে দেয়।
ওয়েব হোস্টিং এর বিভিন্ন ধরন কি কি?
শেয়ার্ড হোস্টিং, ডেডিকেটেড হোস্টিং, VPS হোস্টিং, ক্লাউড হোস্টিং।
ওয়েব হোস্টিং এর জন্য কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত?
আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা, বাজেট, হোস্টিং প্রদানকারীর সুনাম, সাপোর্ট।
ওয়েব হোস্টিং এর জন্য কী কী বৈশিষ্ট্য লাগে?
ডোমেইন নাম, ইমেল অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত স্পেস, ট্র্যাফিক সীমা, আপটাইম, নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য।
ওয়েব হোস্টিং নিয়ে আমাদের শেষ কথা
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে একটি বড় এবং সফল ব্যবসায় ব্লগিং এর কাজে রূপান্তর করতে চান, তাহলে একটি প্রিমিয়াম হোস্টিং সার্ভিস কিনতে হবে।
প্রিমিয়াম হোস্টিং-এর রিসোর্স এবং বৈশিষ্ট্যগুলি আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটকে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে। তার সাথে নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট পাবেন যা আপনি ফ্রি হোস্টিং এর মাঝে পাবেন না।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি ওয়েব হোস্টিং বলতে কি বুঝায় বা Web Hosting মানে কি আপনি জানতে পেরেছেন।
এর পরও যদি আপনি কিছু জানতে চান। তাহলে নিচে আমাদের ব্লগের কমেন্ট করে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা সঠিক উত্তর দিব। আর বাংলাতে আরোও নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদ্বের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন।