পর্তুগাল, ইউরোপের পশ্চিমে অবস্থিত একটি সুন্দর দেশ। এটি তার সমুদ্র সৈকত, ঐতিহাসিক শহর এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখ্যাত।
পর্তুগাল ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন অথবা কাজের জন্য যেতে চান? তাহলে আপনাকে অবশ্যই খরচের বিষয়ে একটি ধারণা থাকা উচিত।
আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকরা বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে পর্তুগাল যেতে পারবে। আর এই ভিসার উপর ভিত্তি করে নির্ভর করবে যে, আপনার পর্তুগাল থেকে কত টাকা লাগবে।
তবে আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসায় পর্তুগাল যাবেন। তাদের ক্ষেত্রে মোট ০৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করে পর্তুগাল যেতে হবে।
কিন্তু কাজের ভিসায় এত বেশি টাকা লাগলেও যদি আপনি ভ্রমণ ভিসা কিংবা স্টুডেন্ট ভিসার পর্তুগাল যেতে পারেন। তাহলে আপনার খরচের পরিমাণ অনেক কম হবে।
সেক্ষেত্রে আপনার পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগবে সে বিষয় গুলো নিয়ে এবার আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।
বাংলাদেশ থেকে কোন কোন ভিসায় পর্তুগাল যাওয়া যায়?
আমি শুরুতেই বলেছি যে, আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিসায় পর্তুগাল যেতে পারবেন। আর বর্তমান সময়ে যেসব ভিসার মাধ্যমে পর্তুগাল যাওয়া যায়, সেই ভিসার নাম গুলো নিচের তালিকায় শেয়ার করা হলো। যেমন,
- বিজনেস ভিসা,
- স্টুডেন্ট ভিসা,
- টুরিস্ট ভিসা,
- ফ্যামিলি ভিসা,
উপরের তালিকায় আপনি যে সকল ভিসার ধরন দেখতে পারছেন। মূলত এই ভিসা গুলোর মাধ্যমে আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে যেতে পারবেন।
আর এই ভিসার প্রকারভেদের উপর নির্ভর করবে যে. বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?
আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাবেন। সবার আগে তাদের জানতে হবে যে, পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে। যদিওবা পর্তুগাল যাওয়ার খরচ নির্ভর করবে আপনার ভিসার ধরনের উপর।
তবে এবার আমি আপনাকে একটি একটি করে ভিসার খরচের পরিমাণ শেয়ার করার চেষ্টা করব। যাতে করে আপনি সঠিক তথ্য জেনে নিতে পারেন।
কাজের ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?
আমাদের বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ মানুষ পর্তুগাল যেতে চায় কাজ করার জন্য। এর কারণ হলো. পর্তুগালে কাজের ভিসায় যেতে পারলে আপনি অনেক বেশি বেতন পাবেন।
আর বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পর্তুগাল কাজের ভিসার চাহিদা বেশি থাকার কারণে, আপনাকে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি খরচ করে পর্তুগাল যেতে হবে।
কারণ বর্তমান সময়ে যদি আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান। তাহলে আপনার প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হবে। যদিওবা এই খরচের পরিমাণ নির্ভর করে আপনার এজেন্সির উপর।
কেননা এমন অনেক ধরনের এজেন্সি রয়েছে, যারা আপনাকে খুব কম খরচে পর্তুগাল কাজের ভিসায় পাঠিয়ে দিতে পারবে। আবার অনেক এজেন্সির ক্ষেত্রে পর্তুগাল কাজের ভিসার যাওয়ার খরচ কিছুটা বেশি হয়।
স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?
বাংলাদেশের মানুষ যে শুধুমাত্র কাজের জন্য পর্তুগাল যেতে চায বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। বরং আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা মূলত উচ্চ শিক্ষার জন্য পর্তুগাল যেতে চায়।
আর সে কারণে আপনারা অনেকেই জানতে চান যে, স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে।
তো আপনারা যারা স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান, তাদের খরচ খুব বেশি হবে না। কারণ বর্তমান সময়ে আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করে স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে পারবেন।
টুরিস্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা মূলত ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন। আর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করার পাশাপাশি তারা পর্তুগালে ভ্রমণ করতে চায়।
যার কারণে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে, টুরিস্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে। তো আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করে টুরিস্ট ভিসা পর্তুগাল যেতে পারবেন।
আমাদের বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসায় পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে সেই বিষয় টি নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তবে এই আর্টিকেলে যে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে সেটা মূলত বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে আনুমানিক টাকার পরিমান ধরা হয়েছে।
কেননা আপনার ভিসার ধরন ও ভিসা আবেদন করার এজেন্সির উপর নির্ভর করে এই টাকার পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।
কাজের ভিসায় পর্তুগাল যেতে কি কি লাগবে?
পর্তুগাল হল অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ একটি দেশ। যার কারণে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের মানুষ সর্বদাই পর্তুগাল কাজের ভিসায় যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে।
তবে যদি আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল কাজের ভিসার আবেদন করতে চান। তাহলে আপনার নিকট বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট থাকতে হবে। আর সেই ডকুমেন্টস গুলোর তালিকা নিচে শেয়ার করা হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট আকারের ছবি।
- পর্যাপ্ত অর্থের প্রমাণ।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- আপনার পর্তুগিজ অপরাধমূলক রেকর্ড পরীক্ষা করার জন্য SEF-কে অনুমতি প্রদানকারী একটি নথি।
- বিদেশী কর্মী হিসাবে স্বাস্থ্য বীমা কভারেজের প্রমাণ।
- পর্তুগালে আবাসনের প্রমাণ।
- আপনার কর্মসংস্থান চুক্তি।
তবে আপনি যদি ইতিমধ্যে পর্তুগালে অবস্থান করে থাকেন। তাহলে আপনাকে পর্তুগিজ অঞ্চলে আইনি প্রবেশের প্রমাণ দেখাতে হবে।
এছাড়াও আপনি যদি আপনার মূল দেশ ব্যতীত অন্য কোন দেশ থেকে পর্তুগাল কাজের ভিসা আবেদন করেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে বৈধ থাকার প্রমাণ দেখাতে হবে।
পর্তুগাল কাজের ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর গাইডলাইন
আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল কাজের ভিসা আবেদন করবেন। তাদের অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
আর আপনার সেই ডকুমেন্ট গুলো অবশ্যই ইংরেজি ভাষা অথবা পর্তুগিজ ভাষার হতে হবে। আর ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর গাইডলাইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে https://visaguide.world/ এখানে ক্লিক করে দেখে আসতে পারেন।
পর্তুগাল কোন কাজের চাহিদা বেশি?
যেহেতু আমাদের বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ মানুষ কাজের ভিসায় পর্তুগাল যায়। সেহেতু আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিতে হবে।
আর সেটি হল, পর্তুগাল কোন কাজের চাহিদা বেশি। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা থাকে।
আর আপনি যদি সেই দেশের চাহিদা সম্পন্ন কাজে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। তাহলে আপনি এই দেশ গুলো তে যাওয়ার পর উচ্চ বেতন চাকরি করতে পারবেন।
সে কারণে এবার আমি আপনার সাথে একটি তালিকা শেয়ার করব। সেই তালিকায় আপনি দেখতে পারবেন যে, পর্তুগাল কোন কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে।
- কনস্ট্রাকশন,
- ইলেকট্রনিক্স,
- ড্রাইভিং,
- ফুড প্যাকেজিং,
- কৃষি কাজ
- গবাদি পশু পালন,
- মেকানিক্যাল,
- হোটেল ক্লিনার,
- শেফ,
- কেয়ারিং ম্যান,
- সিকিউরিটি গার্ড,
উপরের তালিকায় আপনি যে সকল কাজের নাম দেখতে পাচ্ছেন, মূলত পর্তুগালে সেই কাজ গুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর আপনি যদি এই কাজ গুলো তে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
তাহলে আপনি পর্তুগালের মত দেশে খুব সহজে কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি আপনি সেই দেশে কাজ করার বিনিময় উচ্চ বেতন সুবিধা নিতে পারবেন।
পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাওয়া যায়?
আপনারা যারা পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট পেতে চান, তাদেরকে সবার প্রথমে ভিসা আবেদন করতে হবে। আর ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় নথি বা ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে হবে।
যেমন, আপনার পাসপোর্ট, আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ, স্বাস্থ্য সেবার রিপোর্ট ইত্যাদি। তবে এ গুলোর পাশাপাশি আপনার ভিসা ফি সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর আপনাকে নিকটস্থ পর্তুগাল এম্বাসিতে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে সকল ডকুমেন্টস ও ভিসা ফি প্রদান করে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে হবে।
আর আপনি যদি সকল ডকুমেন্টস দিয়ে সঠিক ভাবে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করতে পারেন। তাহলে পরবর্তী সময়ে আপনাকে ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক দেওয়া হবে।
FAQs
পর্তুগাল এর সর্বনিম্ন বেতন কত?
২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী পর্তুগালে গড় বেতন ১,৩১৪ ইউরো। পর্তুগাল এর সর্বনিম্ন বেতন হল প্রতি মাসে €705 (প্রায় বাংলাদেশী টাকা 85,543.51)। এই বেতনটি পূর্ণকালীন কাজের জন্য প্রযোজ্য।
পর্তুগালে কি কি ট্রেডের চাহিদা আছে?
পর্তুগালে হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, ক্যাফে এবং পর্যটনের চাহিদা রয়েছে।
পর্তুগালে কি অপরাধের হার বেশি নাকি কম?
পর্তুগালে অপরাধের হার তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৩ সালের হিসাবে, পর্তুগালের অপরাধের হার ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড়ের চেয়ে কম।
পর্তুগাল এর মুদ্রার নাম কি?
পর্তুগাল এর মুদ্রার নাম হল ইউরো (EUR)।
মানুষ কেন পর্তুগালে চলে যায়?
কারণ, পর্তুগালের মানুষের জীবনধারা অনেক উন্নত হওয়ার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার খরচ অনেক কম।
লিসবনে থাকা কি ব্যয়বহুল?
লিসবন পর্তুগালের রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর। লিসবনে থাকার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে, আপনি যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনি লিসবনে সাশ্রয়ীভাবে থাকতে পারেন।
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
সাধারনত পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে সেটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আর সেই বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনার পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগবে সেটি আজকের আর্টিকেলে শেয়ার করা হয়েছে।
তো এগুলোর পাশাপাশি যদি আপনি পর্তুগাল কাজের ভিসা আবেদন করার উপায় জানতে চান। তাহলে নিচে একটি কমেন্ট করবেন। আপনার কমেন্ট পাওয়া মাত্রই আমরা উক্ত বিষয়টি নিয়ে নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করবো।
ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে Infoportal BD এর সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।